রাজনীতির খবর: পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে মারামারির ঘটনায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার হওয়ায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য জারিন দিয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতারা জানিয়েছেন, সোমবার দিনগত রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন জারিন দিয়া। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তবে তিনি এখন শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ছাত্রলীগের গত কমিটির সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ বলেন, ‘বহিষ্কারের ক্ষোভ থেকে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে দিয়া। তাকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। ওয়াশ করা হয়েছে। এখন তার শারীরিক অবস্থা ভালো।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকায় স্থান না পেয়ে আন্দোলন করেছিলেন ছাত্রলীগ নেত্রী জারিন দিয়া। কমিটিতে পদ না পেয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে উদ্দেশ্য করে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে জারিন দিয়া লিখেছেন-
‘গত ১৩ তারিখ পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার পর যখন দেখলাম আমার নামটি নেই, তখন ভাবলাম- হয়তো যোগ্য না। তাই হয়তো আমার নামটি দেয়নি। একপর্যায়ে শোভন ভাইকে ফোন দিলাম। ভাইকে বললাম, ভাই আমাকে কেন কমিটিতে রাখা হলো না? আমি শুনতে চেয়েছিলাম তিনি হয়তো বলবেন- আমি যোগ্য না। রাজনীতি করতে থাকো, পাবে একসময়। কিন্তু না…
ভাই আমাকে বললেন- তোকে অনেক রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু রাব্বানীর জন্য তোকে রাখতে পারিনি। রাব্বানী তোর ওপর ব্যক্তিগত ক্ষোভ। আমাকে ভুল বুঝিস না। কথাটা শুনে কাঁদব না হাসব বুঝতে পারলাম না। তখন আমি শোভন ভাইকে বললাম- ব্যক্তিগত ক্ষোভের সেই ঘটনাটা। আরও বললাম, কোনো দিন যদি আপার সামনে যেতে পারি ভাই, আমি আপাকে একটা বার বলতে চাই- আপা সম্মেলনের আগে রাব্বানী ভাইয়ের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। তখন ভাই আপনি কী উত্তর দেবেন? কোনো উত্তর দিতে পারেননি শোভন ভাই।
রাব্বানী ভাইকে অনেক বার ফোন দিয়েছি। উনি ফোন ধরেননি। তাই সামাজিকমাধ্যমে ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসে আমার সঙ্গে রাব্বানী ভাইয়ের ক্ষোভের ঘটনাটি উল্লেখ করি। যেটা ভাইরাল হয়ে যায়। আজ সেই স্ট্যাটাসটার জন্য আমাকে ছাত্রলীগ থেকে তারা বহিষ্কার করে দিলেন? আমার দেশরত্নের কাছে একটা প্রশ্ন রেখে যেতে চাই- আমরা মেয়েরা আর কতটা অসম্মানিত হলে তাদের যোগ্য বলে মনে হবে?
শোভন-রাব্বানী ভাই আপনাদের একটা কথা বলে যেতে চাই, ব্যক্তিগত ক্ষোভ না দেখিয়ে যারা সংগঠনের জন্য কাজ করে তাদের মূল্যায়ন দিয়েন। আমি সেদিনের মারামারিতে যখন কোমরে আঘাত পেলাম, কই আপনারা তো আমার একটা খোঁজ নিলেন না! আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। জানি না কী করব। আমি যদি মারা যাই শোভন-রাব্বানী ভাইদের কাছ থেকে উত্তরগুলো নিয়ে আমাকে কলঙ্কমুক্ত করবেন পারলে। রাজনীতি করতে এসে রাজনৈতিক নেতাদেরই দ্বারা এতটা অসম্মানিত হব কোনোদিন ভাবতেও পারিনি।’
প্রসঙ্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে হামলার ঘটনায় সোমবার ছাত্রলীগ থেকে জারিন দিয়াসহ পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।