নিজস্ব প্রতিবেদক : ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরায় স্মারক লিপি প্রদান ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাধারণ পরীক্ষার্থীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, অনিরুদ্ধ স্বর্ণকার। মঙ্গল কুমারের পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপ্পি, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার সভাপতি এড. ফাহিমুল হক কিসলু, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২৪ মে সাতক্ষীরার সদর, আশাশুনি ও শ্যামনগর অঞ্চলের চাকরিপ্রার্থীরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা অংশ নেন। কিন্তু উক্ত পরীক্ষা শুরুর পূর্বে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা থেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর যৌথ অভিযানে প্রশ্ন ফাঁসের সাথে একটি চক্রকে আটক করা হয়। যাদের ২১ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ বছর করে কারাদ- প্রদান করে।
দ-িত অপরাধী চক্রটিকে যখন পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে(পরীক্ষা শুরুর সময় সকাল ১০:৩০ টা এবং আটকের সময় প্রায় সকাল ৮:৩০টা) আটক করা হয় তখন কলারোয়ার একটি ভবনে চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীকে প্রশ্ন বিক্রেতা চক্রটি ফাঁস করা প্রশ্ন ব্লাক বোর্ডে লিখে সেসবের উত্তর শেখাচ্ছিল। পরে সকাল ১০:৩০টায় অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ফাঁস প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। সরকারি সংস্থাগুলোই যেখানে পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নসহ একটি চক্রকে আটক করেছে এবং পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে তার হুবহু মিল পেয়েছে সেখানে সেই প্রশ্নে গ্রহণ করা পরীক্ষা বাতিল করা না হলে হাজার হাজার চাকরি প্রার্থী মেধাবী তরুণ-তরুণীর সাথে প্রতারণা করা হবে বলে আমরা মনে করি। কারণ ১৬ জন প্রশ্ন ক্রেতাকে আটক ও কারাদ- দেয়া হয়েছে কিন্তু যেহেতু প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে তাই ধারণা করা যেতে পারে আরও বহু জন এরকমভাবে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে, সাধারণ মেধাবী চাকরি প্রার্থীরা কিভাবে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন পাওয়াদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকবেন?
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পাবনা জেলা এবং লহ্মীপুর জেলায় কয়েকজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এবিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম সরকারেরই বিভিন্ন সংস্থা যেহেতু প্রমাণ পেয়েছে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সুতরাং, এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে গ্রহণ করা পরীক্ষা অবিলম্বে বাতিল করে পুনারায় পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে এধরনের কোন ঘোষণা না হওয়ায় তারা হতাশ হয়েছেন। বক্তারা অবিলম্বে ২৪ মে ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা বাতিল করে নতুন প্রশ্নে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ এবং অধিকতর তদন্ত করে এই প্রশ্ন ফাসঁ চক্রের মূল হোতাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির দাবিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।