আজকের সেরা

ভারতের গরিব মন্ত্রী সারেঙ্গী আসলে উগ্র মৌলবাদী!

By Daily Satkhira

June 02, 2019

বিদেশের খবর: ভারতের মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানের পর উপমহাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যতম আলোচিত চরিত্র হয়ে উঠেছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গী।

পুরনো এক সাইকেলে চড়ে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা তার সাধাসিধে জীবন যাপনের জন্য পরিচিত। তবে তার আড়ালেই থেকে যাচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সহিংসতায় জড়িত থাকার ঘটনা। নির্বাচনি হলফ নামায় দেওয়া তথ্যে এই নেতা জানিয়েছেন সহিংসতায় উস্কানি, দাঙ্গা, ধর্মীয় সংঘাতে উস্কানিসহ সাতটি অপরাধের মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দুই সন্তানসহ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টাইনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাতেও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

ওড়িশ্যার মানুষের কাছে প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গী একজন নিয়মনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। ক্ষমতাসীন বিজেপির আদর্শিক সংগঠন আরএসএস সমর্থিত বজরং দলের সাবেক রাজ্য প্রধান এই নেতা অবিবাহিত। ২৮ বছর বয়সে রামকৃষ্ণ মিশনে দীক্ষা নিতে চাইলেও পরিবারে বিধবা মা থাকায় সন্ন্যাস নেওয়া হয়নি তার। উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বেশ পুরনো।

প্রতাপ চন্দ্র সারঙ্গী ওড়িশার বালেশ্বর থেকে ১৭তম লোকসভার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বিজেডি প্রার্থী রবীন্দ্র কুমার জেনাকে ১২ হাজার ৯৫৬ ভোটে হারিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০০৪ সালে বিজেপি বিধায়ক হিসেবে এবং ২০০৯ সালে নির্দল বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন সারঙ্গী। তবে তারও আগে থেকে সারঙ্গীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

ওড়িশ্যায় কেওনঝোড়ের খ্রিষ্টান মিশনারীতে কুষ্ঠ রোগীদের নিয়ে কাজ করতেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টাইন। তার বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তর করানোর অভিযোগ তুলে দুই সন্তানসহ ১৯৯৯ সালে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় তাকে। ওই ঘটনায় ভারতীয় আদালতে বজরং দলের নেতা দারা সিংয়ের শাস্তি হয়। অভিযোগ রয়েছে বজরং দলের তৎকালীন রাজ্য প্রধান হিসেবে এই ঘটনায় সরাসরি ইন্ধন ছিল প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গীর। সারঙ্গীর নেতৃত্বে ওই সময়ে বজরং দল ও আরএসএস খ্রীষ্টান মিশনারীদের বিরুদ্ধে ওড়িশ্যার উপজাতিদের জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হত্যার পর ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে মিশনারী ও তার দুই সন্তান হত্যায় বজরং দরের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন সারেঙ্গী। তবে ওড়িশ্যায় খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার দাবি ছিল এতে মিশনারীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

এছাড়াও ২০০২ সালে ওড়িশ্যা বিধানসভায় ভাঙচুরের ঘটনাতেও প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। বিধানসভা ভবন থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরের একটি অবস্থান থেকে বজরং দলের একদল কর্মী হামলা চালায় বিধানসভায়। ওই ঘটনায় বজরং দলের ৬৭ সহকর্মীসহ গ্রেফতার হন তিনি। দাঙ্গা, লুটপাট, নিগ্রহ এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে।