খেলার খবর: লন্ডনের ওভালকে মিরপুর স্টেডিয়াম ভেবে ভুল করলে দোষের হবে না। বাংলাদেশ আজ (রবিবার) ‘ঘরের মাঠে’ই খেলেছে। লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হতাশও করেনি মাশরাফিরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের শুরুতেই তাই শোনা গেল বাঘের গর্জন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের স্কোর দাঁড় করিয়ে গোটা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাওয়া জয় ২২ গজে বাংলাদেশের দোর্দণ্ড প্রতাপেরই সাক্ষী দেয়। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর চমৎকার বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের ৩০৯ রানের বেশি করতে দেয়নি টাইগাররা।
সাইফের দ্বিতীয় শিকার
রাসি ফন ডার ডাসেনকে আউট করে উইকেটের খাতা খোলা সাইফউদ্দিন আবারও করলেন উৎসব। এবার তিনি ফিরিয়েছেন আন্দিলে ফেলুকাওকে। যাতে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ষষ্ঠ উইকেট।
সাইফের বল কাভারের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ফেলুকাও। কিন্তু ব্যাট-বলে না হওয়ায় সাকিবের তালুবন্দী হয়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ফেরেন ১৩ বলে ৮ রান করে।
বোল্ড উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশ
দক্ষিণ আফ্রিকার হারানো ৫ উইকেটের তিনটিই বোল্ড। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের পর স্টাম্প উড়িয়ে উইকেটের খাতা খুলেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন রাসি ফন ডার ডাসেন।
সাইফউদ্দিনের লাইনে থাকা বল সজোরে মারতে চেয়েছিলেন ফন ডাসেন। কিন্তু বল তার ব্যাটে না লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। চমৎকার ইনিংসটা তাই শেষ হয় ৪১ রানে। ৩৮ বলের ইনিংসে তিনি মেরেছেন ১ চার ও ১ ছক্কা।
মিলারের বিদায়ে স্বস্তি
অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ ক্যাম্পে। নতুন করে জুটি বেঁধে ডেভিড মিলার ও রাসি ফন ডার ডাসেন এগিয়ে নিচ্ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অবশেষে মোস্তাফিজুর রহমান ভাঙছেন জুটি। মিলারকে আউট করে স্বস্তি ফিরিয়েছেন তিনি।
মিলারের ভয়ঙ্কর রূপ সম্পর্কে কমবেশি সবার জানা। এর ওপর আবার সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহর সৌজন্যে দুইবার ‘জীবন’ পেয়েছেন তিনি। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ আর ভুল করেননি। মোস্তাফিজের ডেলিভারিতে মিলারের ব্যাটের কানায় লেগে আসা বল পয়েন্টে তালুবন্দী করেন তিনি।
আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে মিলার খেলে যান ৩৮ রানের ইনিংস। যদিও ‘ভয়ঙ্কর’ এই ব্যাটসম্যান সাবধানী ইনিংসে মেরেছেন মাত্র দুটি বাউন্ডারি।
এবার দু প্লেসিকে বোল্ড করলেন মিরাজ
বোল্ড করার উৎসবে মেতেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের পথে হেঁটে মেহেদী হাসান মিরাজও ওড়ালেন বেল। এই স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি।
দলের হাল ধরেছিলেন দু প্লেসি। ওয়ানডে ক্যরিয়ারের ৩৩তম হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে গড়েছিলেন প্রতিরোধ। তবে মিরাজের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে ব্যাটে লাগাতে পারেনি। বল সরাসরি স্টাম্পে আঘাত করলে ৬২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। ৫৩ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায়।
সাকিবের বলে বোল্ড মারক্রাম
অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসির সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েছিলেন এইডেন মারক্রাম। সাকিব আল হাসান ভাঙলেন সেই প্রতিরোধ। বোল্ড করে এই স্পিনার ফিরিয়েছেন মারক্রামকে। লাইনে থাকা বলটি দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনারের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৫৬ বলে করেন তিনি ৪৫ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয়েছিল মন্থর। এরপর কুইন্টন ডি ককের রান আউটে আরও সতর্ক হয়ে ওঠে তারা। যদিও ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে শুরুর পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠে ছাড়ায় ১০০ রান। ১৯তম ওভারে ‘সেঞ্চুরি’ পূরণ করে তারা।
মুশফিকের চমৎকার থ্রোতে ডি কক আউট
বাংলাদেশ পেল প্রথম উইকেট। কুইন্টন ডি কককে রান আউট করে ফিরিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
মেহেদী হাসান মিরাজের বল ডি ককের ব্যাটে লাগলেও গ্লাভসবন্দী করতে পারেননি মুশফিক। তারই শাপমোচন করলেন তিনি সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে। রান নিতে যাওয়ার সময় অন্যপ্রান্তে থাকা এইডেন মারক্রামের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৩২ বলে ২৩ রান করে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে।