খেলার খবর: কার্ডিফে ৮ জুন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। দু’দলেরই এটা তৃতীয় ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচে দুই দলেরই সমান অভিজ্ঞতা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ড দু’দলই। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এই দুই দল হেরেছে খুব ক্লোজ ম্যাচে। ইংল্যান্ড হেরেছে পাকিস্তানের কাছে এবং বাংলাদেশ হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে।
এই পর্যন্ত বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের অবস্থা বলতে গেলে প্রায় সমান সমান। ৮ জুন কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে এই অবস্থা বদলে যাবে। একদল যাবে এগিয়ে, অন্যদল যাবে পিছিয়ে। বৃষ্টি কিংবা অন্য কোনো কারণে ম্যাচ বাতিল হলেই কেবল অবস্থা থাকবে অপরিবর্তিত।
কিন্তু কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে মাঠে নামার আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উজ্জীবিত হওয়ার যথেষ্ট রসদ রয়েছে বাংলাদেশের হাতে। বরং, বলা যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ডের চেয়ে ঢের এগিয়ে বাংলাদেশ।
কিভাবে? যেখানে এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ধরা হচ্ছে টপ ফেবারিট, বলা হচ্ছে তারাই হতে পারে এবারের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন, সেখানে কিভাবে ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকে বাংলদেশ?
মূলতঃ এগিয়ে পরিসংখ্যান এবং ইতিহাসে। বিশ্বকাপ এবং কার্ডিফের ইতিহাস ও পরিসংখ্যান সামনে নিয়ে আসলেই অনুপ্রেরণায় বলিয়ান হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। অন্যদিকে সেই একই ব্যাপারগুলো সামনে আসলে ইংল্যান্ড ব্যর্থতার বেদনায় মুষড়ে পড়তে বাধ্য।
প্রথমে আসা যাক বিশ্বকাপের ইতিহাসে। গত দুই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের মুখোমুখি ফলে কিন্তু এগিয়ে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে নিজ দেশের বিশ্বকাপে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা। ইংল্যান্ডের করা ২২৫ রানের স্কোর ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ আর শফিউল ইসলামের বীরত্বে পার করে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ সেঞ্চুরি আর রুবেল হোসেনের আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখায় বাংলাদেশ। সে সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় ওই ম্যাচে হেরেই।
অর্থ্যাৎ, শেষ দুই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়া মানেই ইংল্যান্ডের হার। অথচ, ইংল্যান্ড বরাবরই শক্তিশালী দল। সেরা সেরা খেলোয়াড়দের নিয়েই দল গঠন করে তারা।
এবার আসা যাক কার্ডিফে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের পরিসংখ্যানের দিকে। ওয়েলসের কার্ডিফ শহরের সোফিয়া গার্ডেন বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই একপি পয়া ভেন্যু। এখানে খেলতে নামলে যেন বাংলাদেশের সাফল্য আসবেই। এখানে টাইগারদের সাফল্য শতভাগ।
এর আগে দু’বার কার্ডিফে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। একটি ২০০৫ সালে। সেবার মোহাম্মদ আশরাফুলের অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মত ৫ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার করা ২৪৯ রান ৫ উইকেট হাতে রেখেই পার হয়ে যায় টাইগাররা।
এই মাঠে ২ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। কিউইদের করা ২৬৫ রানের জবাব দিতে নেমে ৩৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এক অতিমানবীয় জুটির ওপর ভর করে দুর্দান্ত এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। জোড়া সেঞ্চুরি করেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ।
যে মাঠে বাংলাদেশের সাফল্য শতভাগ, সেখানে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের জন্য কার্ডিফ কিন্তু অনেকটাই পিছিয়ে। গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে কার্ডিফ ইংল্যান্ডের জন্য কতটা অপয়া। গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে এই মাঠে পাকিস্তানের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে।
এই কার্ডিফে ইংলিশদের সাফল্য একেবারেই নেই তা নয়। তবে এই মাঠে ১৩ ম্যাচ খেলে ইংলিশরা জিতেছে ৭টিতে এবং হেরেছে ৬টিতে। জয়-পরাজয়ের তুলনা করলে দেখা যাবে ৫৫:৪৫। শতভাগ তো নয়।
এমন এক ভেন্যুতে খেলতে নামার আগে পরিসংখ্যান এবং ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত উজ্জীবিত হবে বাংলাদেশ এবং খানিকটা দোদুল্যমনতায় ভুগবে ইংল্যান্ড।