আন্তর্জাতিক

বারবার পুলিশি তল্লাশির জেরে মসজিদই গুড়িয়ে দিলো মুসলিমরা

By Daily Satkhira

June 10, 2019

বিদেশের খবর: দেড় মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ইস্টার হামলার ক্ষত এখনও টাটকা। শ্রীলঙ্কার বুকে এখন বাস করছে আতঙ্ক আর সন্দেহ। খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ইসলাম ভীতি বেড়ে গিয়েছে ব্যাপকভাবে। ফেজ টুপি পরিহিতদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকানোর প্রবণতাও বেড়েছে।এমন পরিস্থিতিতে একটি বিতর্কিত মসজিদই ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল দ্বীপরাষ্ট্রের মুসলিমরা।

বিবিসি-র প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কিত মাদাতুগামার প্রধান মসজিদটি ভেঙে ফেলেছেন স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। মসজিদটিতে ইস্টার হামলার পর বারবার অভিযান চালিয়েছিলো পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, ওই মসজিদটি পরিচালনা করত নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত বা এনটিজে৷ সেখানে নিয়মিত সভাও বসত জঙ্গি সংগঠনটির।

উলেখ্য, গত এপ্রিল মাসে শ্রীলঙ্কার একাধিক গির্জায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটায় এনটিজে। ওই আত্মঘাতী হামলাগুলিতে প্রাণ হারান প্রায় ২৫৩ জন নিরীহ মানুষ। তারপর থেকেই সেনা ও পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা।

ইতিমধ্যে সন্ত্রাস দমন অভিযানে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকশো সন্দেহভাজনকে। পাশাপাশি সংখ্যাগুরু সিংহলিদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে মুসলিমদের। সব মিলিয়ে দ্বীপরাষ্ট্রে এখন পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তপ্ত।রমজান মাস চলাকালীনও নিরাপত্তা বাড়ালেও একাধিক হামলা হয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর। তাই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই বিতর্কিত মসজিদটি গুঁড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

মসজিদের ট্রাস্টি বোর্ডের এক সদস্য আকবর খান বলছেন, “ইস্টার হামলার পর পুলিশ কয়েক দফা তল্লাশি চালিয়েছে মসজিদ। এতে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মুসলিমদের প্রতি অন্য সম্প্রদায়গুলির অবিশ্বাসও বেড়ে গিয়েছে। আমাদের শহরে অন্য যে মসজিদ আছে সেটি মুসলিম পরিবারগুলির প্রার্থনার জন্য যথেষ্ট।”

তিনি আরও জানান, মে মাসেই মসজিদটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে মিনার, নামাজ কক্ষ ধ্বংস করে ভবনটি আগের মালিকের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে শ্রীলঙ্কার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ রামিজ বলছেন, “মসজিদ ধ্বংসের পন্থা বেছে নিলে এমন শত শত মসজিদ ধ্বংস করতে হবে। দেশের দশ থেকে পনেরো শতাংশ মসজিদ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি চালায়। গত দু’দশকে বেশ কিছু জঙ্গিগোষ্ঠী ওয়াহাবী মতাদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে।”