এসএম বাচ্চু,তালা: তালা সদরের আগোলঝাড়া ও ডাঙ্গানলতা গ্রামের মধ্যবর্তীস্থানে মাঠের মধ্যে দীর্ঘদিনের পড়ে থাকা মাটির টিবিটি এখন দর্শনীয়স্থান। প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর মাটির টিবির মধ্যে খুজে পেয়েছেন মধ্যযুগের আমলের পুরাকীর্তির নিদর্শন। যা দেখতে সেখানে প্রতিদিন ভিড় করে হাজারো মানুষ। ঈদকে ঘিরে দর্শনীয় এ স্থানটির আকর্ষণের মাত্রা বেড়েছো বহুগুণ।ধারণা করা যায় মোঘল আমলের কোন এক রাজা বাদশা প্রার্থনার জন্য তৈরী করেছিল একটি মন্দির। কালের বিবর্তনে এক সময়ে সেটি মাটি চাপা পড়ে যায়। আর সেটি এলাকায় জীনভূতের তৈরী করা ঝুঁড়ি ঝাড়ার মাঠ নামে এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। তবে গত কয়েক মাস আগে থেকে সেখানে খননকাজ পরিচালনা শুরু করে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের একটি টিম। এরপরই সকল কাল্পনিক ধারণার পরিবর্তন ঘটে যায় এলাকার মানুষের মধ্যে। এখন প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাচীনতম এ নিদর্শনটি। স্থানীয় আগোলঝাড়া গ্রামের ২৬ বছর বয়সী নাজমুল হোসেন জানান, জন্মের পর থেকেই আমরা ওইস্থানটিকে ঝুঁড়ি ঝাড়ার মাঠ হিসেবেই জানি। এলাকায় কথিত রয়েছে জ্বিনেরা পুকুর খননের পর সেখানে মাটির ঝুঁড়িগুলো ঝেড়ে ফেলে রাখে সেই থেকেই উৎপত্তি হয় ঝুঁড়ি ঝাড়ার মাঠের। তবে বর্তমানে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর সেখানে খনন কর পেয়েছেন ঐতিহাসিক নিদর্শন। যা দেখার জন্য প্রতিদিন হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। আশেপাশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে দোকানপাট। অবসর সময় কাঁটাতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এখানে এসে ভিড় করেন। ঐতিহাসিক এ নিদর্শনের বিষয়ে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা বলেন, মাটির টিবিটি খনন করে আমরা সেখানে মধ্যযুগীয় আমলের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পেয়েছি বর্তমান পর্যন্ত। বৃষ্টির সময়টা পার হলে সেখানে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের তত্বাবধায়নে নতুনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এছাড়া বর্তমান পর্যন্ত যেগুলোর সন্ধান পেয়েছি সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কোনভাবেই ঐতিহাসিক এ নিদর্শনগুলোকে আমরা নষ্ট হতে দিতে চাই না। তিনি আরও জানান, তার চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা হবে। ঐতিহাসিক এ নিদর্শনটি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। তবে সকলকে সতর্ক করা হয়েছে কোনভাবেই যেন নিদর্শনের কোনকিছুতে ক্ষয়ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম না চালানোর জন্য। তালাবাসী এটিকে দর্শনীয়স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। জ্বীনভূতের তৈরী করা ঝুঁড়ি ঝাড়ার মাঠের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি নিছক গুজব ছাড়া কিছু নয়।