নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা জেলা ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর (টিআই) মমিন উদ্দীনের বিরুদ্ধে সড়ক-মহাসড়কে যত্রতত্র মটরযানে অভিযান,চালক ও যাত্রী সাধারনের হয়রানি, কেস স্লিপের নামে লাখ লাখ টাকার ঘুষ বানিজ্য এবং মাসোয়ারা আদায়ের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। জানা গেছে জেলার কলারোয়া উপজেলাধীন তুলসীডাঙ্গা গ্রামের মুত শামসুদ্দীন আহম্মদের পুত্র ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের খুলনা মেট্রো-ট ১১-০৮৮৫ ট্রাকটি গত বছরের ১৭মে ভোমরা হতে মাল বোঝাই করে খুলনা দিকে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরা হাসপাতাল মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট ওয়াসিম মল্লিক গাড়ী থামিয়ে কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে ৩হাজার টাকা দাবি করেন। চালক দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঐ কর্মকর্তা তাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ দিয়ে কেস স্লিপ ধরিয়ে দেন। এ ঘটনার ১০দিন পর ২৭/৫/২০১৮ ইং তারিখ ট্রাক মালিক আব্দুর রহমান সাতক্ষীরা ট্রাফিক অফিসে গিয়ে টিআই মমিন উদ্দীনের হাতে কেস স্লিপ দিলে তিনি প্রথমে ১৪ হাজার পরবর্তীতে ১২ হাজার টাকার কম হলে কেস ভাঙ্গানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। ঐ সময় গাড়ীর মালিক অনেক অনুনয় বিনয় করলেও তিনি কোন কথায় কর্নপাত না করে উল্টো গাড়ীর মালিকের সাথে দুর্ব্যবহার করেন । এক পর্যায়ে তার অফিস থেকে গাড়ীর মালিককে বের করে দেন। নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি কমপ্লেন সেল,ডিআইজি খুলনা,ডিআইজি ডিসিপ্লিন পুলিশ হেড কোয়াটার্স ঢাকা ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার বরাবর পৃথক ভাবে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৮জুন (শনিবার) পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স’র ডিসিপ্লিন শাখার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ইন্সপেক্টর মো. হেলালউদ্দীন কলারোয়া থানায় এসে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। ঐদিন বিকালে তার সাথে সেল ফোনে এ প্রতিবেদকের আলাপ হলে সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশের নানাবিধ অনৈতিক কর্মকান্ডের সত্যাতা মিলেছে বলে জানান। তথ্যানুসন্ধান করে জানা যায়, ১৯৮৩ সালের মটরযান আইনের যানবাহন ও চালকদের কাগজপত্র ক্রটির কারনে ১৭টি ধারা ও অপরাধের বর্ননা অস্থায়ী কেস স্লিপে উল্লেখ করা হয়। আইনটি ১৯৮৮(সংশোধিত) ১৫৯(১) ও ১৬২ ধারা মতে জরিমানা আরোপের জন্য উক্ত কেস স্লিপের ধারার উপর আবশ্যিক টিক চিহ্ন দেয়ার কথা । অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, দেশের অন্যান্য জেলা ট্রাফিক পুলিশের অস্থায়ী কেস স্লিপের উল্লেখিত ধারায় আবশ্যিক টিক চিহ্ন লেখা থাকলেও সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশের কেস স্লিপে এসব কথা উল্লেখ না করে যানবাহান মালিক ও চালকদের সাথে অব্যাহত ভাবে স্লিপ বানিজ্য করে আসছেন। প্রকৃত পক্ষে মটরযান আইনে ১৩৭ ধারায় ২০০ টাকার পরিবর্ত্তে ৫০০ টাকা আদায় করে সরকারী খাতে জমা হয় ২০০ টাকা ,১৪০ ধারার অপরাধে ১০০০টাকা আদায় করে জমা করা হয় ৫০০ টাকা,১৪৯ ধারায় ২০০০ টাকা আদায় করে জমা করা হয় ২৫০ টাকা ১৫২ ও ১৫৫ ধারায় ২০০০ টাকা আদায় করা কথা থাকলেও ২/৩ গুন আদায় করা হয়। যা সরকারী খাতে জমা হয় কিনা ভুক্তভোগীরা জানেন না । ১৫১ ধারায় ৫০০০ টাকার পরিবর্তে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া ১৩৮ ধারায় অপরাধ আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার বিধান থাকলেও সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশ এসবের তোয়াক্কা না করে নিজেরাই নিস্পত্তি করে থাকেন ভুক্তভোগিদের অভিযোগ। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ কেস স্লিপের টাকা জমা দিলে রশিদ দেয়ার নিয়ম থাকলেও সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশ কাউকে কোন রশিদ না দিয়ে দিনের পর দিন প্রতারনা করে আসছেন। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর(টিআই) মমিন উদ্দীন বিরুদ্ধে নানাবিধ অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয় জানতে চাইলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। কেস স্লিপ ভাঙ্গানোর সময় ভুক্তভোগিদের রশিদ দেওয়া হয় কিনা জানতে চাইলে প্রেসার উঠে গেছে বলে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।