দেশের খবর: ঈদুল ফিতরের আগে-পরে গত ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ২১২টি দুর্ঘটনায় ২৪৭ জন নিহত ও ৬৬৪ জন আহত হয়েছেন। আর শুধু দেশের সড়ক-মহাসড়কে ১৮৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত, ৬৫২ জন আহত ও ৩৭৫ জন পঙ্গু হয়েছেন বলে জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। বুধবার (১২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিএম কামরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এবারের ঈদে সরকারের সদিচ্ছা ও রেশনিং পদ্ধতিতে ছুটি থাকায় ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কিছুটা কমেছে। এরপরও ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৩০ মে থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরার সময় ১০ জুন পর্যন্ত গত ১২ দিনে ১৮৫টি দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত, ৬৫২ জন আহত ও ৩৭৫ জন পঙ্গু হয়েছেন। একই সময়ে নৌপথে ৫টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। উল্লিখিত সময়ে রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন ও পশ্চিমাঞ্চলে ৯ জনসহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৬৩টি বাস, ৩৮টি ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ, ১৯টি কার-মাইক্রোবাস, ৩০টি নছিমন-করিমন, ভটভটি-ইজিবাইক, অটোরিকশা, ৬৪টি মোটরসাইকেল, ২৬টি অন্যান্য যানবাহন এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫১টি গাড়িচাপায়, ৮১টি সংঘর্ষ, ১৯টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, অন্যান্য কারণে ৩৪টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।’
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ উল্লেখ করেছে−ঈদকেন্দ্রিক অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ, চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালকের হাতে দৈনিক চুক্তিতে যানবাহন ভাড়া দেওয়া, ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন-করিমন, মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল এবং বিরতিহীন/বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া দুর্ঘটনা কমাতে ১০টি সুপারিশমালা তুলে ধরে সংগঠনটি। তার মধ্যে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ফিটনেস পদ্ধতি ডিজিটাল করা, মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটোরিকশা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন করা এবং রেশনিং পদ্ধতিতে ছুটির ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।