শ্যামনগর

শ্যামনগরের সরকারি বই বিক্রির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

By daily satkhira

June 12, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে রাতের আঁধারে বিক্রির সময় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে জনতা কালিগঞ্জের মৌতলা বাজারের বিশ্বজিৎ সরকারের ভাঙড়ির দোকান থেকে এক পিকআপ ভর্তি সরকারি বই আটক করেছে। আটককৃত বই কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে তালা মেরে সিল গালা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে জেলা শিক্ষা অফিসার তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠণ করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত একটি পিকআপ ভর্তি বিপুল পরিমান সরকারি বই শ্যামনগরের চণ্ডিপুরের ভাঙড়ী মালের ব্যবসায়ি শামীম মৌতলা বাজারের বিশ্বজিতের ভাঙড়ির দোকানে কেজিতে বিক্রির জন্য এনেছেন এমন খবরের ভিত্তিতে তিন ওই পিকআপ আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে খবর দেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ি আনুমানিক ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের তিন কুইন্টাল ৪০০ কেজি বই পরিষদের একটি কক্ষে রেখে তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানায় যে, শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর হোসেন তার কাছে ওই বউ বিক্রি করেছেন। পিকআপে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মাধ্যমিক স্তরের সরকারি সকল পর্যায়ের বই রয়েছে। এদিকে বুধবার বিকেল তিনটার দিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদুজ্জামান ও বিকেল ৬টায় জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ২০১৫ সালের অব্যবহৃত/ব্যবহৃত উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের সকল প্রকার সরকারি বই বিক্রি করে দেওয়ার জন্য একটি রেজুলেশনে সাক্ষর গত ১০ জুন করেন তিনি। শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরম আলী যেসব কাগজপত্র বই বিক্রির সময় ক্রেতা শামীমকে দিয়েছেন তাতে যে সাক্ষর ও সিল দেখানো হয়েছে তা তার নয়। এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। এ ছাড়া ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের বই বিক্রির কোন অনুমোদন দেওয়া হয়নি। শ্যামনগরে যে সরকারি কর্মকর্তার হেফাজতে ওই বই রাখা ছিল তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। ভাঙড়ি ব্যবসায়ি শ্যামনগরের চণ্ডিপুরের শামীম হোসেন বলেন, তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরম হোসেনের কাছ থেকে যথাযথ টাকা দিয়েই বইগুলো কিনেছেন। তার দেওয়া কাগজপত্র পরিষদে জমা দিয়েছেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সিল ও সহি জাল হলে দায় শিক্ষা অফিসারের। শ্যামনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, কিভাবে রেজুলেশনবিহীন বইগুলো বিক্রি হচ্ছিল এটা তিনি জানেন না। সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শ্যামনগর উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের বই অবৈধভাবে বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি গঠণ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আটককৃত বই মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে রেখে তালা মেরে সিলগালা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ কক্ষের চাবি কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীনের কাছে রাখা হয়েছে।