বিদেশের খবর: সৌদি আরবে ১৩ বছর বয়সে আটক মুর্তাজা কুরেইরিসকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে দেশটির সরকার। খবর রয়টার্সের।
২০২২ সালেই তাকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক কর্মকর্তা।
এই তরুণের ফাঁসি কার্যকর হলে সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী কারও মৃতুদণ্ড দেওয়া হতো।
শনিবার সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই কর্মকর্তা বলেন, তাকে মৃত্যুদণ্ড দে্ওয়া হচ্ছে না।
২০১১ সালে আরব বসন্তে উত্তাল ছিল মধ্যপ্রাচ্য ও আরবের কয়েকটি দেশ। আরব বসন্তের হাওয়া লাগে সৌদিতেও। সৌদি রাজতন্ত্রের নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের দাবিতে ওই সময় দেশটিতে বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন মুর্তাজা কুরেইরিসও। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।
সে সময় বিক্ষোভের অংশ হিসেবে প্রায় ৩০ জন বন্ধু নিয়ে সাইকেল র্যালি করেছিলেন মুর্তাজা। এই অল্পবয়সী বালকদের জড়ো হওয়ার বিষয়টি সেসময় পর্যবেক্ষণ করে সৌদি সরকার। ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তিন বছর পর মুর্তাজাকে ১৩ বছর বয়সে গ্রেফতার করা হয়। পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ বাহরাইনে চলে যাওয়ার সময় সীমান্তে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সৌদি আরবের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ‘রাজনৈতিক বন্দী’ হিসেবে মুর্তাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে।
পাঁচ বছর ধরে কারাগারে বন্দী আছেন মুর্তাজা। এতদিন মুর্তাজার বিরুদ্ধে বিচার চলে সৌদি আদালতে। মুর্তাজাকে ফাঁসি দিতে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়।
মুর্তাজার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, মুর্তাজার ভাই আলী কুরেইরিস পূর্বাঞ্চলীয় শহর আওয়ামিয়াতে গিয়ে থানায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেন, সেসময় তার সঙ্গে ছিল মুর্তাজাও। মুর্তাজার ভাইকে সে সময় হত্যা করে সৌদি বাহিনী।
১০ বছর বয়সে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মুর্তাজা কুরেইরিসের এখন ১৮ বছর বয়স। মুর্তাজা কুরেইরিস তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সৌদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলেছে, ১০ বছর বয়সে করা অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অন্যায়।
কয়েকটি দেশের সরকারও মৃত্যুদণ্ড না দিতে সৌদির প্রতি অনুরোধ জানায়। এরইমধ্যে দেশটির এক কর্মকর্তা মুর্তাজা কুরেইরিসের ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে না বলে জানালেন।