আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোঁজাডাঙ্গা শুল্ক ষ্টেশনে সে দেশের কাষ্টমস্ বিভাগ সম্প্রতি অনলাইন পদ্ধতি (অটোমেশন সিস্টেম) চালু করায় আমদানি রপ্তানির ধ্বস নেমে এসেছে। অনলাইন পদ্ধতি চালু করায় সার্ভার জটিলতা, প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্ট না থাকা, অদক্ষ টেকনিশিয়ান ও কম জনবল দ্বারা দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করায় প্রচুর সময় ক্ষেপনের কারনে ভোমরা ও ঘোজাডাঙ্গা বন্দরের আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম হঠাৎ ৭০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৩/৪ ”শ পন্যবাহী ট্রাক বন্দরের প্রবেশ করতো সেখানে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হওয়ায় দিনে ৫০/ ৬০ টির বেশী গাড়ী ঢুকছে না এ বন্দরে। আগে এ বন্দর দিয়ে কাঁচামাল বিশেষ করে ফলসহ বিভিন্ন পচনশীল পন্য এ বন্দর প্রচুর প্রবেশ করতো। কিন্তু এখন সময় ক্ষেপনের কারনে আমদানী কারকসহ ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এ বন্দর থেকে। এর ফলে ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। বেকার হয়ে পড়ছেন এ বন্দরের হাজার হাজার শ্রমিক। একই সাথে সরকারের রাজস্বও ঘাটতি হচ্ছে। আগে ভোমরা বন্দর দিয়ে বছরে এক হাজার কোটিরও বেশী টাকা রাজস্ব আদায় হলেও সেটি এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ১৯৯৬ সালে থেকে মূলত ভোমরা স্থল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারনে বাংলাদেশের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসেবে ইতিমধ্যে ভোমরা স্থল বন্দর স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকার প্রতিবছর প্রায় হাজার কোটি টাকা এই বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় করে থাকে। চলতি অর্থবছরে এই বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০টি পণ্য বোঝায় ভারতীয় ট্রাক ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করে থাকে। কিন্তু গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে হঠাৎ আমদানি রপ্তানিতে রিতিমতো ধস নেমেছে। সাতক্ষীরার ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরাফাত হোসেন জানান, গত মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারত সরকার ঘোঁজাডাঙ্গা স্থল বন্দরের কাস্টমস্ বিভাগ আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘অটোমেশন সিস্টেম’ (অনলাইন কার্যক্রম ) চালু করে। আর এই ‘অটোমেশন সিস্টেম’ চালুর পর থেকেই সার্ভার জটিলতার মুখে পড়ে বন্দরটি। ঘোঁজাডাঙ্গা বন্দরে দক্ষ জনবলের অভাবের কারনে এ সমস্যা নিরসন হচ্ছে না বলে জানাগেছে। যে কারনে প্রতিদিন গড়ে ১০০টি পণ্যবাহী ট্রাক ছাড় করাও সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে ফলে ভোমরা বন্দরে দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে হঠাৎ ধস নেমেছে। আর এ কারনে ভোমরা স্থল বন্দরে একদিকে যেমন সরকারি রাজস্ব আদার আশংকাজনক হারে কমে গেছে, অপরদিকে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রমিকদের আগের মতো আর কাজ নেই, তারা বেকার হয়ে পড়ছে। এ সমস্য দ্রুত সমাধান না হলে ভোমরা বন্দর থেকে আমদানিকারকরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ভোমরা স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো: রেজাউল করিম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৫ মে থেকে ভারতের ঘেঁজাডাঙ্গা স্থল বন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অনলাইন কার্যক্রম চালু করেছে। গত রোজার ঈদের আগে থেকেই জটিলতা শুরু হয়েছে। ঈদের পরও একই অবস্থা বিরাজ করছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ৩’শ থেকে সাড়ে ৩’শ টি পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করতো এখন সেখানে গড়ে ১০০টি ভারতীয় ট্রাকও বাংলাদেশে প্রবেশ করছে না। ভারতীয় পারে অনলাইন কার্যক্রম চালুর পর সার্ভার জটিলতার কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি আরো জানান।