জাতীয়

ডিজির ২১ নিকটাত্মীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা!

By Daily Satkhira

June 20, 2019

দেশের খবর: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল এর ২১ নিকটাত্মীয় এখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। শ্যালিকা, ভাতিজা, ভাতিজা বৌ, ভাগিনা ও ভাগ্নিসহ নিকটাত্মীয়রা এই নিয়োগে রয়েছে। ইতোমধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার অভিযোগও উঠেছে ডিজির বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে যোগদানের পর নানা অনিয়মের মাধ্যমে এসব নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি যখন ডিজি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তার একমাত্র আত্মীয় ছিলেন তার ভায়েরা ভাই সৈয়দ শাহ এমরান। তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিল। এখন তার চারপাশে ছোট বড় পদে প্রায় অর্ধশত নিকটাত্মীয়।

জানা গেছে, আপন বোনের মেয়ে ফাহমিদা বেগম (সহকারী পরিচালক, কক্সবাজার জেলায় উপ-পরিচালক পদে কর্মরত) আরেক বোনের মেয়ে সিরাজুম মুনীরা (মহিলা কো-অর্ডিনেটর, বায়তুল মোকাররম), বোনের ছেলে মাওলানা এহসানুল হক (জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের পেশ ইমাম), আপন ভাইয়ের ছেলে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (সহকারী পরিচালক, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি), ভাইয়ের ছেলে শাহ আলম (উৎপাদন ব্যবস্থাপক, চট্টগ্রাম) আরেক ভাইয়ের ছেলে রেজোয়ানুল হক (প্রকাশনা কর্মকর্তা), আরেক ভাইয়ের ছেলে মিসবাহ উদ্দিন (হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, ৫৬০ মডেল মসজিদ প্রকল্প), শ্যালিকা ফারজিমা মিজান শরমীন (আর্টিস্ট, প্রেস শাখা), শ্যালিকার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (সহকারী পরিচালক, প্রশাসন), বন্ধুর মেয়ে সৈয়দ সাবিহা ইসলাম (সহকারী পরিচালক, প্রসাশন)।

এছাড়া আত্মীয় আবদুল্লাহ আল মামুন (সহকারী পরিচালক, উৎপাদন), আত্মীয় ইলিয়াস পারভেজ (সহকারী পরিচালক, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প) ডিজির ছেলে অনিকের গৃহশিক্ষক আতিয়ার রহমানকে প্রোগ্রাম অফিসার (ইসলামি মিশন) পদে নিয়োগ প্রদান করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই পদের সবগুলোই প্রথম শ্রেণির।

সামীম মোহাম্মদ আফজাল তার আপন ভাইয়ের ছেলে রাসেল মিয়াকে ইসলামিক মিশনের ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান পদে, আরেক ভাইয়ের ছেলে মুনিম ও মাহমুদকে এলডিএ পদে, মাহমুদের স্ত্রীকে ল্যাব টেকনিশিয়ান, আত্মীয় রতনকে ফিল্ড সুপারভাইজার, ফয়সালকে হিসাব রক্ষক পদে, ইউডিএ হিসেবে আনোয়ারুল আজিম, গবেষণা সহকারী পদে আনোয়ারুল হককে নিয়োগ দেন।

ডিজি শুধু আত্মীয়কে নিয়োগ দিয়েই ক্ষান্ত হননি। বন্ধু এমনকী বান্ধবীদের ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীরাও বাদ যাননি আত্মীয়করণ থেকে। ঘনিষ্ঠ পরিচালক মু. হারুনুর রশিদের ছেলে নাজমুস সাকিবকে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে, পরিচালক তাহের হোসেনের স্ত্রীর বোনের মেয়ে সাহিনা আক্তারকে সহকারী পরিচালক পদে, পীরভাই জালাল আহমদের স্ত্রী মাহমুদা বেগমকে প্রোগ্রাম অফিসার পদে এবং ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পরিচালক এবিএম শফিকুল ইসলামের আত্মীয় হোমায়রা আক্তারকে পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন।

এদিকে ইফা ডিজির বিরুদ্ধে লেখক সম্মানি নিয়ে নয়-ছয়, কেনাকাটার টাকা লুটপাট, পদোন্নতিতে দুর্নীতি ও জ্যেষ্ঠতা লংঘন এবং নিয়োগ-বদলির ক্ষেত্রে নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

এসব অনিয়মের কারণে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ডিজির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। এদিকে ১৮ জুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রীও তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। তাছাড়া ডিজি অফিস না করে ৩ দিনের ছুটির দরখাস্ত পাঠিয়েছেন ইফা’তে। যদিও এই ছুটির আবেদন যথাযথ হয়নি বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশন সচিব।

ছুটি ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজাল এর মোবাইলে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।