দেশের খবর: অভিযোগের তদন্ত থেকে রেহাই পেতে সরাসরি ও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘুষ লেনদেন করেছেন বহুল আলোচিত পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমান।
এমন প্রমাণই মিলেছে গোপনীয়ভাবে ধারণ করা বেশ কয়েকটি অডিওতে। আর এতে তাকে সহযোগিতা করেছেন আব্দুল দয়াছ নামের এক লন্ডন প্রবাসী। রাজধানীর একটি হোটেলে তাদের মধ্যে এসব আলাপ হয়েছে।
একটি অনলাইন গণমাধ্যম সম্প্রতি এরকম পাঁচটি অডিও রেকর্ডের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে। তদন্ত ও মামলা থেকে ছাড়া পেতে দুদক কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার কথাও বলেছেন ডিআইজি মিজান।
অডিওর তথ্যানুসারে ঘুষ প্রদানের সমন্বয়কারী পেশায় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী আব্দুল দয়াছ যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের ছাতারপইয়ে তার গামের বাড়ি।
ডিআইডি মিজান ও দয়াছের সঙ্গে আলাপে ছিলেন এলপিআরে থাকা দুদক পরিচালক আব্দুল আজিজ ভূইয়া। ইকবাল, এনামুল বাছির, শফিক, নাসিম, জাহিদ ও পাটোয়ারী-এই ছয়জনকে ঘিরে চলে তাদের দীর্ঘ আলাপ।
অডিও আলাপের ব্যক্তিরা দুদক কর্মকর্তা। আর তাদের অনেকেই দয়াছের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনটি অডিও রেকর্ডের সময় এ বছরের ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি। অন্য দুটি অডিও রেকর্ডের সময় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ৩০/এ, ভিআইপি রোড, নয়াপল্টনের হোটেল ভিক্টোরির ২১১ নম্বর কক্ষে দয়াছ, ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক আব্দুল আজিজ ভূইয়ার মধ্যে ওই কথোপকথন হয়।
দয়াছ, মিজান ও আজিজের কথোপকথনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
প্রথম কথোপকথন
ডিআইজি মিজান: বসের সাথে দেখা হয় নাই।
দয়াছ: বসের সাথে দেখা হইলো, গল্পটল্প হইলো। বললো এবার ইলেকশনে মজা লাগলো না। কয় এই দয়াছ তুমি জানো…আজিজ ভাই আছিলো আমার লগে। ইলেকশনটা মজা লাগলো না।
ডিআইজি মিজান: হা হা…(হাসি।) যাকগে এগুলা বাহিরে বলা যাবে না।… এখন কী?…এনামুল বাছির কী বললো?
দয়াছ: ওকে আছে। আজকে আইবো। লেনদেনের কথা। কাল-পরশু দিয়া দিয়েন কিন্তু। …না দিলেও কইরা দিতো।
ডিআইজি মিজান: না, আমি দেবো।
দয়াছ: আপনি নিজেই দিয়েন।
ডিআইজি মিজান : ওর সামনে আমি ফেস হই না। আপনি নিয়ে নেন। ডিমান্ড বেশি না। আজকেই দিয়া দেই। আজিজ ভাই থাকবো।
দয়াছ: ডিমান্ড টিমান্ড বুঝি না। ওইসব কথা বইলা লাভ নাই। আমাদের প্ল্যান করতে হইবো। আপনার বিষয়টা তো ক্লিয়ার করতে হইবো। নিলে বলবো আরও দেবো। কারণ, আপনারটা ক্লিয়ার করতে হইবো।
ডিআইজি মিজান: আর বসের ব্যাপারটা?
দয়াছ: আরেকজন বন্ড কমিশনার আছিলো, তারে ক্লিয়ার কইরা দিয়া আইছি। ৪০ লাখ… ইকবাল ভাইরে কয়া আমি ক্লিয়ার কইরা আলাইছি।
ডিআইজি মিজান: ইকবাল ভাইরে দিয়া আপনের বলাইতে হইবো।
দয়াছ: আমি তো…শুনেন।
ডিআইজি মিজান: শুনে আমি করবো?
দয়াছ: করছি তো। আপনেরে আমি দেখাই। আপনি তো বিশ্বাস করবেন না। আমার কাজ তো আপনি বুঝবেন না।
ডিআইজি মিজান: দরকার নাই। আমার দরকার কাজ। ইকবাল ভাইয়ের সাথে আপনার কি সম্পর্ক না সম্পর্ক সেটা আমার দরকার নাই।
দয়াছ: না.. না… আমি কই আপনাকে।
ডিআইজি মিজান: শোনেন…ওর সাথে কোথাও বসেন।
দয়াছ: আজকে বইয়া…আমি তো শনিবার যাইতাম গি। আমারে আজিজ ভাইয়ে কয় আমরা তো…।
ডিআইজি মিজান: শফিককে কী আর দরকার আছে?
দয়াছ: না, শফিককে আর দরকার নাই।
ডিআইজি মিজান: ওকে। ও তো (বাছির) আমাদের ভয় করে। ওরে আবার বইলেন না। তাইলে ও তো আবার মাইন্ড করতে পারে। শফিককে দেবে কিনা মনে হয়?
দয়াছ: আপনের এইটা চিন্তা করা লাগবো না।
ডিআইজি মিজান: একজনের কথা আরেকজনকে বলা যাবে না।
দয়াছ: বলা যাবে না তো।
এরপর অন্য প্রসঙ্গে আরও কিছু সময় আলাপ চলে।
দ্বিতীয় কথোপকথন
ডিআইজি মিজান: আজিজ ভাই, দয়াছ ভাই, দুজনেই আছেন। আমার এটা কী করবেন? শেষ পর্যায়ে আর কী।
দয়াছ: উনি (বাছির) আপনার সাথে কথা বলছে কি?
ডিআইজি মিজান: উনি (বাছির) আমার সাথে অতো…ই…হবে না। এখন আমি বলি, ওখানে যে…ই…আছে না…ডাইরেক্টর শফিক…শফিককে কীভাবে কী দেয়া যায়?
দয়াছ: না না…, শফিক কোনও সমস্যা না।
আজিজ: শফিক কিছু করবে না। হেই রিপোর্ট দিয়া দিবো। সে সাইন দিয়া দিবো শেষ।
ডিআইজি মিজান: এখন আমার কী করার আছে?
আজিজ: শফিকরে আমরা…এই যে…এর আগে যা হইছে না। শফিকরে এর আগে আমরা কম বুঝাইছি?
দয়াছ: তাইলে…কী আর কই!
ডিআইজি মিজান: না, কাজ তো অনেক আগাইছে। দয়াছ ভাই যে উপকারটা করছে। উপকার তো করছে। অস্বীকার করার কিছু নাই।
দয়াছ: রিপোর্টটা দিবে।
ডিআইজি মিজান: রিপোর্টটা, সে (বাছির) বলে ওপর থেকে বলাইতে।
দয়াছ: ওপর থিকা তো আর বলা লাগবে না।
ডিআইজি মিজান: না ভাই, আমি আর উনার সাথে কথা বলবো না।
দয়াছ: চেষ্টা করেন।
আজিজ: এগুলা তো অফিসার সুলভ কথা না।
ডিআইজি মিজান: না, না অতো বেশি প্রেসার দিয়েন না। প্রেসার দিলে ভয় পাইয়া যাইবো। এমনি বেচারা…ডায়াবেটিস টায়াবেটিস কি আছে না…।
তিন জনের কথোপকথনের একপর্যায়ে দয়াছ একটু সরে মুঠোফোনে কারও সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় আজিজের সঙ্গে ডিআইজি মিজান কথা বলতে থাকেন। পরে কথা শেষ করে দয়াছ আবার যোগ দেন।
ডিআইজি মিজান: এখন আমি বলি, আমি আপনাকে বলি ভাই। আমার তো যা…
আজিজ: দিছেন…
ডিআইজি মিজান: আরে ১০, ১০-বিশ টোটাল দেয়া হইছে। … এখন তো আমার ক্ষতি তো বা…
আজিজ: দয়াছ তাইলে বলে না ক্যা, করে না কেন।
ডিআইজি মিজান: এখন সে নিছে নাকি অন্যরে দিছে তা তো আমি জানি না।
আজিজ: সে নিতে যাবে কেন?
ডিআইজি মিজান: এখন আমি…শফিকরে দিয়া একটু বলান না।
আজিজ: শফিকরে আমি বলতে পারবো।
ডিআইজি মিজান: শফিকরে আপনি বললে মাইন্ড করবো।
আজিজ: না, না…শফিকের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক।
ডিআইজি মিজান: শফিকের যদি কিছু লাগে…আমি কিছু দিয়া দেই।
আজিজ: শফিকের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। কিন্তু রিপোর্টটা তো হ্যার দিতে হইবো।
ডিআইজি মিজান : রিপোর্ট…শোনেন…রিপোর্ট সে দেবে। ভেতরের খবর পাইছি। রিপোর্টটা সে করতাছে খুব চুপেচাপে। কারও জানা নাই। বুঝছেন। আমার সব গেছে। আরেক জায়গায় টাকা দিলাম সেই টাকাটা মাইর গেছে। এখন আমাকে আর কী করতে হবে…
আজিজ: আইচ্ছা উনি আসুক।
মুঠোফোনে কথা শেষে দয়াছ আসেন।
ডিআইজি মিজান: ভাই…এখন যেটা বোঝা গেছে…ভাই হিসেবে বলি আপনাকে।
দয়াছ: ভাই হিসাবে না বইন হিসাবে বলেন।
ডিআইজি মিজান: (হাসি…) ও শালা…আপনারে ভয় পায়…কি নাম ওর…?
দয়াছ: হু…এনামুল
ডিআইজি মিজান: এনামুল বাছির…। এখন সে…ভেতরের খবর পাইলাম। ভেতরের মানে কি নিচের লেভেলে। কাজ করতে আছে। ও কী করতে আছে আমি জানি না।
দয়াছ: হু…
ডিআইজি মিজান: সে আমার কথা শুইনা…যেহেতু আপনার সাথে কথা বলছে…ভাইয়ের (আজিজ) সাথে কথা বলছে। জাহিদ ভাই কথা বলছে…। এখন আমার কথা হলো যে…কোনও যদি খেদমত লাগে…শফিক বা…শফিক হলো মেইন। তাহলে সেটাতো ফুলফিল করতে পারি…অসুবিধা নাই…বা ও যদি চায়…।
দয়াছ: আজকালের মধ্যেই কথা হইবো।
ডিআইজি মিজান: ও যদি চায়…
দয়াছ: দেখি টেলিফোনে অরে…এনামুল বাছিররে। ধরতাছে না।
ডিআইজি মিজান: এখন ও ভয়ে কথা বলবে না। এই নম্বরে (অফিসিয়াল নম্বর) কথা বলবে না।
দয়াছ: হু…
আজিজ: চাকরির ব্যাপার তো…
ডিআইজি মিজান: চাকরির ব্যাপার তো কথা বলবে না।
দয়াছ: হু…
ডিআইজি মিজান: আমি তাকে কালকে একবার রিং দিছি এই নম্বরে…সে আমারে লিখছে ডোন্ট কল মি। লিখছে যে হোয়াই ইউ আর কলিং মি…
আব্দুল দয়াছ: আপনারে ম্যাসেজ দিছে…
(একসঙ্গে সবার হাসি)
ডিআইজি মিজান: আমি তো আর কল করি নাই।
দয়াছ: কল দিছে…কল দিছে… সে কল দেবে তারটা ট্র্যাকিং হবে…আমারটা…আমারটা ট্র্যাকিং হবে না। (ফোনে কথা বলেন) ওয়ালাইকুম সালাম। ভাই কই। আমি আইছি তো ঢাকা…গতকালকা বিয়াশাদি খাইয়া সিলেট থেকে। আপনি ফ্রি হইলে ফোন দিয়েন…আমি তো আছি একা একা। আমি তো অফিসে যাইতামই। আপনিও সময় পেলে চইলা আইসেন এদিকে। হোয়েন এভার ইউ ফ্রি…আমি তো হোটেলেই।…(অপর প্রান্তের কথা শুনে) তাইলে আমি দেখমুনে। গোসল টোসল কইরা আপনারে ফোন কইরা আসমুনে ওইদিকে। ওকে সালামালাইকুম।
(এই কথোপকথনের অন্য পাশের বক্তব্য নেই)।
ডিআইজি মিজান: এখন আমি বলি…
দয়াছ: ও (বাছির) বলে, ভাই…
(সবার হাসি…)
ডিআইজি মিজান: ভয় পাইছে, ভয় পাইছে…। দয়াছ ভাই আমি বলি…টাকাডা বড় কথা না…মানসম্মান বড় কথা। আমার ফাইলে তো কী আছে সবাই জানে…কিছুই নাই। উনারা তো বিশেষজ্ঞ। উনারা দেখছে…ইয়ে দেখছে…আপনি নিজে দেখছেন…এরপর আমার কাছে যে কাগজপত্র চাইছে আমি সব দিছি।
আজিজ: দিয়া দিছেন?
ডিআইজি মিজান: সব দিয়া দিছি। তারপর সে নিজে নেগেটিভ, পজেটিভ কিছু বলে নাই। তবে একটা জিনিস বলছে যে…মিজান ভাই আমি যেটুকু পারি আপনার মানসম্মান রাখবো। এটুকু বলছে। সে কিন্তু একেবারে নেগেটিভ কিছু বলে নাই…আবার পজেটিভও না।
দয়াছ: সে কিন্তু না করলে বলতো না। সে কিন্তু স্কোপ দিয়া রাখছে।
ডিআইজি মিজান: এখন সবাই মিলা আমাকে…শোনেন শোনেন ভাই…দয়াছ ভাই…আপনে শফিককে একটু পজেটিভ কইরা দেন…যাতে সে নেগেটিভ না হয়। আর ওকে একটু বলে দেন…
দয়াছ: আমি আপনাকে বলি…আমরা কি বুঝি না…ইকবাল স্যার তো ডেইলি বলবে না। ওইদিন যা বলার বলছে…
ডিআইজি মিজান: না, না, না…ইকবাল স্যার তো…
দয়াছ: ইকবাল ভাই…বলছে জাস্টিস ফর এনাফ…
ডিআইজি মিজান: এইটুকু বললেই হয়…
দয়াছ: বুঝছেন…এইটা তো বলছে…নাইলে ওরা কী বলছে…আমি বুঝি না।
ডিআইজি মিজান: এইটা কি শফিকরে বলছে…?
দয়াছ: আমি বলি শফিক মিয়া তো…ওরা…আলাপ হইছে…এনামুল বাছির আর শফিকরে…এনামুলরে বলছে একটা ডাইরেক্টর দিয়া করাইয়া দেও। এবং শফিকরেও তো দিছে এনামুল বাছিরে, আজিজে কথাবার্তা কইয়া…এরা সবাই কথাবার্তা বলছে…যদি নেগেটিভ হইতো…স্যারে যেভাবে বলছে তাহলে তো উল্টা কইতো…।
(একটু পর তিনি আবারও বলেন)
দয়াছ: শুনেন, তার প্রমোশন আছে না…১০ লাখ, ২০ লাখ আর ৫০ লাখতো ব্যাপার না। শুনেন, এখানে নাসিম ভাই ছিল…তারে খুলনায় পাঠাইছিল। এরপর ইকবাল ভাইরে সাইজ টাইজ কইরা তারে ঢাকায় নিয়া আসছি না…
(দয়াছ আবারও বলেন)
দয়াছ: এনামুল বাছিরের কথা যদি কইয়া দেই সে টাকা খাইছিল…একটা প্রধানের ব্যাপারে আপনার ভালো কইতে হইবো…তার ভালো ছাড়া খারাপ কইবার পারেন না…আনলেস আপনার ম্যাজেস্ট্রিসি দেখাইতে হবে…এনামুল বাছিররা যে সিন্ডিকেট ক্রিয়েট করছে….
ডিআইজি মিজান: বাড়ি কই? এনামুল বাছিরের বাড়ি কই? কুমিল্লা?
আজিজ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়…
ডিআইজি মিজান: না, না, এনামুল বাছিরের বাড়িতো কুমিল্লায়…
দয়াছ: ইকবাল ভাই যারে স্ট্যান্ড রিলিজ করি ফালায়, তার জিন্দেগি খারাপ হয়া যায়…ইকবাল ভাইরে রিকোয়েস্ট কইরা নাসিমরে ঢাকা আনছি।
তৃতীয় কথোপকথন
ডিআইজি মিজান: এখন শোনেন আপনি যে কয়দিন আছেন, জোর করে অরে রিপোর্ট দিয়া দিতে বলেন…
আব্দুল দয়াছ: রিপোর্ট তো দিয়া দিবো।
ডিআইজি মিজান: আপনি থাইকা একটু পজেটিভ কইরা দিয়া যান না! যেহেতু আমি নিজে…সাফারার তো…আর কতো? শফিক ও আর ও, বাছির…শফিক যদি কিছু চায়….অসুবিধা নাই।
আজিজ: আমরা যেটা করছি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করার কিছু নাই…
দয়াছ: না না এরপরও তো মনে করেন…
ডিআইজি মিজান: ফাইলে কিছু নাই…আপনি কি স্যাটিসফাইড, আমার ফাইলে কিছু আছে?
আব্দুল দয়াছ: বাছির জানে চেয়ারম্যান পজেটিভ। না হলে তো তার….
ডিআইজি মিজান: তা তো বটেই…সেটা সে বোঝে…এতদিন চাকরি করছে এটা সে বোঝে না? আপনি তাইলে ইমিডিয়েটলি এনামুল বাছিরকে বইলা দেন…ই… করতে…আমি আপনার ওয়েতে কইরা দেবো…পজেটিভলি।
দয়াছ : সে আমারে কইছে একদিন…‘মিজান ভাই আমারে কইছে এক কোটি টাকা দেবো’…। …টাকা যেহেতু খাইছে, কইরা দিবো। সে তো টাকা খাওয়ার লোক না।
আজিজ: এনামুল বাছির আপনার ফেভারে আছে। শফিকও ফেভারে আছে।
ডিআইজি মিজান: শফিক যাতে ফেভারে থাকে।
দয়াছ: সব ঠিক আছে…
ডিআইজি মিজান: তারপরও আগে কিছু দেয়া হইছে…ফাইনালি আরও কিছু দিলাম…।
আজিজ: কিছু আনবো…।
ডিআইজি মিজান: না, আপনি চাইলে আমি বলি…।
চতুর্থ কথোপকথন
ডিআইজি মিজান: বসেন, বসেন…আমি আপনার সাথে কথা বলে চলে যাবো। আরে ভাই একঘণ্টা লাগলো। জ্যাম, পুরা জ্যাম। আপনার ফ্লাইট কবে? যাবেন কবে?
দয়াছ: শনিবারে।
ডিআইজি মিজান: কনফার্ম? যাক এখন কী অবস্থা?
দয়াছ: অবস্থা হইলো…আমি আপনারে…
ডিআইজি মিজান: না…বাছিরকে আজকে আসতে বলেন…
দয়াছ: কথা হইছে…
ডিআইজি মিজান: কী বললো…আমি জানি যে মিস্টার দয়াছ পারবে…বলেন…আপনি যদি না থাকেন…লন্ডন চলে যান। তাইলে এই ফাইলটা যদি নোট হয়…যে রিপোর্ট দিবে…পজেটিভ রিপোর্ট দিবে বা… মেম্বার দুজন লেখবে…তারপর চেয়ারম্যানের কাছে যাবে।
দয়াছ: আপনার স্ত্রীর বিষয়টাও…লেখা থাকবে… থাকতে পারে…।
ডিআইজি মিজান: ওর ট্যাক্স ফাইল আছে তো… প্রোপার্টির ঘোষণা দেয়া আছে তো। ১০/১২ বছরের ট্যাক্সের কাগজ নিয়ে আসছে তো। ওনারে নিয়া রিপোর্ট হয় না। আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা পাটোয়ারী আমারে নিজে কইছে…
দয়াছ: ওনার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে…
ডিআইজি মিজান: এটা করলে ভুল করবে তারা।
পঞ্চম কথোপকথন
দয়াছ: আমি বলছি মিজান ভাই সবকিছু ওভারকাম করবো। আইজি না হলেও অতিরিক্ত আইজি হইবো।
ডিআইজি মিজান: স্যারকে কী করা যায়?
আব্দুল দয়াছ: স্যার কনভিন্সড।
ডিআইজি মিজান: এখন শফিককে কী করা যায়?
দয়াছ: কোনও সমস্যা নাই।
ডিআইজি মিজান: ও খায়। মুন্সীগঞ্জে ওর এক আত্মীয় আছে, তার মাধ্যমে খায়।
ডিআইজি মিজান: দিনাজপুরের কয়লাখনি নিয়ে কোনও ঘটনা আছে। এইটা নিয়া খাইছে।
দয়াছ: বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি। দোষীদের ছাইরা দিচ্ছে ও।
ডিআইজি মিজান: আমি না একদম জিরো হইয়া গেছি। বিশ্বাস করেন। আমার কান্না, আপনার ভাবির কান্না কেউ দেখলে এই ক্ষতি করতে পারতো না আমাদের।
দয়াছ: এনামুল বাছির কেমন লোক মনে হয়?
ডিআইজি মিজান: ঠান্ডা লোক। ডায়াবেটিস আছে…ই… আছে। চালু আছে…দুদকের লোক তো।
দয়াছ: সমস্যা নাই।