দেশের খবর: তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি মিজানুর রহমান ও তার পরিবারের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশনেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা হয়। তিন কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
কমিশন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সোমবার (২৪ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রোববার (২৩ জুন) কমিশনের নির্ধারিত বৈঠকে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সোমবার কমিশনের রেজুলেশন পাস হয়। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (সজেকা) তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ।মামলা নম্বর- ০১।
ফলে দুদকের সংশোধিত বিধিমালায় প্রথম মামলাটি হলো পুলিশের বিতর্কিত ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। এর আগে দুর্নীতি সংক্রান্ত যে কোনো মামলা থানায় গিয়ে করতে হতো। রোববার সংশোধিত বিধিমালার গেজেট প্রকাশ হয়। এর ফলে কমিশন যে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি মিজানুর, তার স্ত্রী, ভাই ও ভাগ্নের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে জন্য ইমিগ্রেশনে পুলিশের কাছে চিঠিও দিয়েছে কমিশন।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পুলিশের উচ্চপদে থেকে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু হয় ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি। প্রায় দেড় বছর অনুসন্ধান করে দুদক অভিযোগের সত্যতা পায়। স্থাবর-অস্থাবর বিভিন্ন সম্পদ ডিআইজি মিজানের মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ ও ভোগদখলে রয়েছে; যা তার বৈধ আয়ের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করে। এর আগে, বিষয়টির অনুসন্ধান করেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। তার আগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অনুসন্ধান করেন উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্বে থাকা দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে (সাময়িক বরখাস্ত) অনুসন্ধান করতে গিয়ে ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি এ সংক্রান্ত তিনটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেন। এরপরই ডিআইজি দুদক এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে। আর মিজান-বাছির ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধানে পৃথক একটি কমিটি করে দুদক।
মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি তোলপাড় সৃষ্টি করে।
ওই ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরসহ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।