আজকের সেরা

সাতক্ষীরায় দোকান কর্মচারিকে আটকে অর্থ আদায়; কাটিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ তছলিম প্রত্যাহার

By Daily Satkhira

June 24, 2019

নিজস্ব প্রতিনিধি: পুলিশের কাছে মোটর পার্টসের দাম বেশি চাওয়ায় দোকান কর্মচারিকে ধরে এনে ফাঁড়িতে ফেলে নির্যাতন চালিয়ে মিথ্যা মামলায় চালান দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় এক এসআই ও এক কনেস্টবলকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। রোববার রাতে পুলিশ সুপারের আদেশ প্রাপ্তির পর সোমবার সকালে তারা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত হয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার শহরের কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তছলিম আহম্মেদ ও পুলিশ সদস্য জাহিদ হোসেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শহরের চায়না বাংলা শপিং সেন্টারের পাশে ‘অটো পয়েন্ট’ মোটর পার্টসের দোকানে রোববার সকাল ১১টার দিকে এসআই তছলিম আহম্মেদ ও সিপাহী জাহিদ হোসেন যান তাদের মোটর সাইকেলের হেডলাইটের পাশে থাকা একটি পার্টস কিনতে। কিন্তু দোকান মালিক শুব্রত বিশ্বাস দোকানে না থাকায় কর্মচারি পুরাতন সাতক্ষীরার চয়ন হোসেন ওই পার্টসটির দাম বলেন ৮০০ টাকা। পরে ৭০০ টাকায় দেয়া যাবে জানালেও এসআই তছলিম অন্য দোকান থেকে ৩শ টাকায় ক্রয় করেন। এরপর তিনি অটো পয়েন্ট মোটর পার্টসের দোকানে গিয়ে গালি গালাছ করতে থাকেন ওই কর্মচারিকে। কর্মচারি জানান, স্যার মালিক না থাকায় আমি দাম ঠিকমত জানিনা। এরপরও বেলা ১২ টার দিকে ওই কর্মচারি চয়নকে দোকান থেকে তুলে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন এসআই তছলিম ও সিপাহী জাহিদ। এরপর শুরু হয় দরকষাকষি। সেখানে নির্যাতনের পাশাপাশি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে পুলিশ। এক পর্যায়ে দোকান কর্মচারি চয়নের অপর সহযোগি নুরুজ্জামান দোকান মালিক শুব্রত বিশ্বাস চিকিৎসার জন্য ভারতে থাকায় শুব্রতর স্ত্রীকে জানায়। এক পর্যায়ে শুব্রতর স্ত্রী ফাঁড়িতে গেলে তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবী করে পুলিশ। পরিস্থিতি বুঝে শুব্রতর স্ত্রী ৫ হাজার টাকা দারোগার জন্য ও সিপাহীর জন্য আরও ৩০০ টাকা দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে চয়নকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।

চয়নের সহযোগি নুরুজ্জামান জানান, ফাঁড়ি থেকে ফিরে এসে চয়ন এই টাকা কিভাবে শোধ করবে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে চয়ন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির নাম্বার সংগ্রহ করে সেখানে ফোন দেয়। তাৎক্ষনিক বিষয়টি দেখার জন্য এবং ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন তিনি। এরপর পুলিশ সুপার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুৎ মিশকে ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

এঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে এএসআই নাসির পৌর কমিশনার সাগরকে সাথে নিয়ে শুব্রতর স্ত্রীর নিকট থেকে নেয়া ৫ হাজার টাকা বাড়িতে গিয়ে ফেরত দিয়ে আসে। এরপরও এইআই তছলিম আহম্মেদ ও সিপাহী জাহিদ হোসেনের শেষ রক্ষা হলনা। রাতে পুলিশ সুপার তাদের উভয়কে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। সোমবার সকালে এসআই তছলিম আহম্মেদ ও সিপাহী জাহিদ হোসেন পুলিশ লাইনে সংযুক্ত হয়েছেন বলে সূত্র জানায়।