রাজনীতির খবর: জামায়াতে ইসলামীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ এক সময়ের কঠোর জামায়াতবিরোধী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। বীরবিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, ১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়। দেশকে তারা অনেক ভালোবাসে, তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী এসেছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশকে ভালোবাসে এবং তারা দেশপ্রেমিক।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের মধ্যবর্তী নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।
অলি আহমদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সব দলকে আমরা সঙ্গে নেব। আপনি আমার কথা লক্ষ্য করেননি। কোনো জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করল কারা? অন্যের ঘাড়ের ওপর বন্দুক রেখে কথা বলা ঠিক না। সব সময় আমি অন্যকে দোষ দিয়ে আগাব, এটা ঠিক না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ১৯৭১ সালের জামায়াত এবং ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়। দেশকে তারা অনেক ভালোবাসে, তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী এসেছে।
এ সময় দর্শক সারিতে থাকা জামায়াত কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাততালি দেন।
অলি আহমদের দাবি, জামায়াত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমিক শক্তি। যারা দেশকে ভালোবাসে, দেশকে মুক্ত করতে চায়, দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়, যারাই আমাদের সঙ্গে আসতে চাইবে, তাদের আমরা সঙ্গে নেব। তবে দালাল-বেঈমানদের না।
এ সময় এক সাংবাদিক ‘দালাল- বেঈমানদের’ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে এলডিপি সভাপতি বলেন, কারা যে দালাল-বেঈমান, এটা কারো অজানা না। আমাদের অনেকে দালালি করেছে বলে আজকে জাতির এই অবস্থা। আমাদের সঙ্গের সিনিয়র লোক তাদের চেনেন, তারা জানেন গত ১০-২০ বছর ধরে কীভাবে তারা দালালি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ ১৮ দফা দাবি আদায়ে জাতীয় মুক্তমঞ্চের ঘোষণা দেন। ১৮ দফা দাবি আদায়ের জন্য আর কিছু করবেন কি না জানতে চাইলে অলি আহমদ বলেন, ‘দিস ইজ দ্য বিগিনিং। আগে দেখেন কী হয়। এখানে সব মুক্তিযোদ্ধা, কোনো দালালদের কাজ না।
নির্দিষ্ট কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে অলি আহমেদ বলেন, এটাই তো নির্দিষ্ট কর্মসূচি। গত ১০ বছরে এ রকম কর্মসূচি কেউ দিয়েছে? এটাই আমাদের কর্মসূচি, এটা নিয়েই আমরা জনগণের কাছে যাব। আমাদের এই জাতীয় মুক্তমঞ্চ কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে সমর্থন দেবে না। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাউকে সাহায্য করবে না। জনগণকে ভয় দেখানো যাবে না। সরকারকে বোঝাতে হবে আপনারা ভুল পথে আছেন।
১৮ দফা অতীতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে কখনো দেওয়া হয়নি দাবি করে অলি আহমদ বলেন, শুধু সবার একটাই দাবি ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমি যখন বলা শুরু করেছি মধ্যবর্তী নির্বাচন চাই, তখন সবাই বলা শুরু করেছে। আসলে আমি টেস্ট করার জন্য বলেছিলাম। মধ্যবর্তী নির্বাচন শুদ্ধ কথা নয়, পুনর্নির্বাচন শুদ্ধ কথা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার নেতা তাসমিয়া প্রধান, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ইসলামী সংগীতশিল্পী মুহিব খান। মঞ্চে না বসলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ।