ফিচার

ছিনতাইকারীদের নৃশংসতার শিকার কিশোর শাহীনকে ঢাকায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে

By Daily Satkhira

June 30, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় ছিনতাইকারীদের নির্মম নৃশংসতার শিকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালক কিশোর শাহীনকে (১৪) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার রাত ১০টার দিকে শাহীনকে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আজ রাতেই শাহীনের মাথায় অস্ত্রপচার করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানিয়েছেন সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তিনি বলেন, সংসদ অধিবেশন চলাকালীন বিষয়টি জানতে পেরে তিনি কিশোর শাহীনকে নিয়ে ঢাকার পথে থাকা তার চাচা মুনছুরের সাথে কথা বলেন। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদেরকে শাহীনের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন যে, শাহীনের স্কাল্পে বড় ধরনের ইনজুরি হয়েছে। তার নিউরো সার্জারি করা প্রয়োজন। ডা. রুহুল হক শাহীনের চিকিৎসকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

এদিকে, ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে চিকিৎসকেরা শাহীনকে দেখছে।

এরআগে, শনিবার বিকেলে খুলনার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোর শাহীনকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান নিয়ে টাকা রোজগারে বেরিয়েছিল শিশু শাহীন (১৪)। দুপুরের দিকে কয়েকজন ভদ্রবেশধারী দুর্বৃত্ত শাহীনের রিকশা-ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহীন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে ওই দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।

শাহীন যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। বসতভিটে ছাড়া তাদের কোন জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিনি একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান কেনেন। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলেন। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। এখন ছেলের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এর সাথে আছে এনজিওর ঋণের কিস্তি, মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো, আর খাওয়া-পরার টেনশন।

শাহীনের এলাকা কেশবপুরের মঙ্গলকোট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বর) জহির রায়হান বলেন, ঘটনাটি অমানবিক। যারা এ ঘটনায় জড়িত তারা মানুষরূপী পশু না হলে একটি শিশুর মাথা ফাটিয়ে ভ্যান ছিনতাই করতে পারতো না। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের দাবি জানান।