দেশের খবর: আষাঢ়ের মাঝামাঝি এসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সারা দেশে সক্রিয় হয়ে ওঠায় মঙ্গলবার ভারী বর্ষণের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বর্ষার এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি ও শেষার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান সোমবার বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
“এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।”
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমূদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস তুলে ধরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এ মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের (গড়ে ২০ দিনের বেশি) সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে।”
জুলাইয়ে বঙ্গোপসাগরে ২-৩টি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে।
এছাড়া মৌসুমী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে জুলাই মাসের মধ্যভাগে ও শেষার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আভাস দেন সামছুদ্দিন।
তপ্ত জুন:
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এবার জুন মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭% কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) ছিল দুর্বল। ৯ জুন ও ২০ জুন দুটো লঘুচাপ থাকলেও তা আর নিম্নচাপের রূপ পায়নি। বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় এবং কম সক্রিয় থাকায় জুনে বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে।
জুন মাসে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেসহ বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপপ্রবাহ বয়ে যায়। সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন ও গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ১৭ জুন মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে।