সাতক্ষীরা

ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যা মামলার তিন আসামির জামিন

By Daily Satkhira

March 11, 2017

এম. বেলাল হোসাইন : সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান ইমন হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত তিন আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গত বৃহষ্পতিবার তারা সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান। জামিনে মুক্তি পাওয়া আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের স্বাস্থ্য কর্মী ইখতিয়ার হোসেন বিপ্লব, কলেজ ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি মোল্যা। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যার পর ইমনের লাশ ধুলিহর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের ইকবাল বিশ্বাসের মাছের ঘেরে ফেলে রাখা হয়। পরদিন সকালে পুলিশ ওই লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পরপরই আলমগীর হাসান আলমের ইঙ্গিতে পুলিশ আমতলা থেকে স্বাস্থ্য কর্মী ইখতিয়ার হোসেন বিপ্লব, সুলতানপুর থেকে কলেজ ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান মুরাদ ও রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি মোল্যাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নিহতের চাচা আলমগীর হোসেন আলম বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আলমগীর কবীর দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক আলাউদ্দিন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি কাজী সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। যদিও তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় সাইফুলকে ৭ ফেব্রুয়ারি তার বাড়ির দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রনি, বিপ্লব ও মুরাদকে কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সাইফুলকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে পাঠালে তিনি তার সিদ্ধান্ত প্যত্যাহার করেন। তবে ১১ ফেব্রুয়ারি আদালতে পাঠানো সাইফুলের ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয় যে, আলমগীর হাসান আলমের পরিকল্পনায় সাইফুলের সহযোগিতায় রনি এসএস পাইপ দিয়ে ইমনকে হত্যা করে। ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ শহরতলীর মাছখোলা ব্রিজের নীচে বেতনা নদীর চর থেকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ওই এসএস পাইপ উদ্ধার করে। মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র উপপুলিশ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মামলার কেস ডকেট হাতে পান। জটিল এ মামলাটির পর্যবেক্ষণ করতে সিআইডি’র স্পেশাল সুপারইনটেনডেন্ট দেলোয়ার হোসেন ২৭ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরায় আসেন। তিনি বাদি ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। বাদির উপস্থিতিতে হত্যা সংশ্লিষ্ট লাশ পড়ে থাকার স্থল ঘুরে দেখেন। তিনি আরো জানান, হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করতে কারাগারে থাকা সাইফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবদের জন্যআদালতে ১০ দিনের রিমা- আবেদন জানালে গত ৮  মার্চ শুনানী শেষে বিচারক রিমা- আবেদন না’মঞ্জুর করেন। এরই মধ্যে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি কামরুল ইসলাম ছিদ্দিকী ও বিচারপতি জাফর আহম্মেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আসামি বিপ্লব শেখ, মুরাদ ও রনি মোল্লাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিলে গত বৃহষ্পতিবার তারা সাতক্ষীরা কারাগার থেকে মুক্তি পায়। তবে এ হত্যাকা-ে বাদির সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে না দিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন ওই সিআইডি কর্মকর্তা। এদিকে জামিনে মুক্তি পাওয়া বিপ্লব শেখ ও মুরাদ হোসেন জানায়, মামলায় বাদি আলমগীর হোসেন আলম কোন নাম না উল্লেখ করলেও তারই ইশারায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে। পুলিশও বাদির কথা মত তাদেরকে জিজ্ঞাবাদের জন্য আদালতে কয়েকবার রিমা- আবেদন করেছে। চাচাত ভাই ইমনের হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা।