দেশের খবর: ধর্ষণ যেন কোনো ব্যাপারই না। এটা যেন গা সওয়া হয়ে গেছে। চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘটছে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা। এসব থেকে রেহাই পাচ্ছে না ছোট ছোট শিশুরাও। শুক্রবারও নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় শিশু শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একটি মাদরাসার অধ্যক্ষকে আটক করে কেন্দুয়া থানা পুলিশ। মাওলানা আবুল খায়ের বেলালী নামে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুটি ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। এক বছরে তিনি ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
এদিকে অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল খায়ের বেলালীর ধর্ষণের বর্ণনা তুলে ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া। তিনি লিখেছেন, ‘তিনি একজন দাওরায়ে হাদিস মাওলানা (সিলেট বালুরচর কওমি মাদরাসা থেকে), একজন বক্তা, একজন ইমাম, শুক্রবারের জুমার নামাজের খতিব। মাওলানা (!) আবুল খায়ের বেলালী। শুক্রবারও তার বয়ান শোনার জন্য আধা ঘণ্টা আগে মুসল্লিরা এসে অপেক্ষা করেন মসজিদে। তিনি যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) সেই মা হাওয়া (আ.) কওমি মহিলা মাদরাসায় প্রায় ৩৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রী রয়েছে, যাদের ১৫ জন আবাসিক। সেখানে তিনিও আবাসিক।
সময় সুযোগ বুঝে তিনি কলিংবেল চাপেন আর ওনার পছন্দমতো একজন কোমলমতি ছাত্রীর ডাক পড়ে তার শরীর টিপে দেয়ার জন্য। এক পর্যায়ে তিনি সেই অবুঝ শিশুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। শেষে আবার কোরআন শরিফ হাতে দিয়ে শপথ করান কাউকে কিছু না বলার জন্য। বললে আল্লাহ তাকে দোযখের আগুনে পোড়াবেন বলেও হুমকি দেন। ভয়ে কোমলমতি ছাত্রীরা কাউকে কিছু বলে না। কিন্তু এক সাহসী বীরাঙ্গনা সেই ভয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়ী হয়, বলে দেয় তার বড় বোনসহ বাড়ির সবাইকে সেই যন্ত্রণার মুহূর্তগুলোর কথা।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক হন সেই হুজুররূপি ধর্ষক। থানায় আটক থাকা অবস্থায় আরও এক শিশু শ্রেণির ছাত্রীর অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে তার নামে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাই, গত এক বছরে আরও ছয় ছাত্রীর সঙ্গে তিনি একই রকম কুকর্ম করেছেন। যাদের সবার বয়স ৮ থেকে ১১ এর মধ্যে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করি, সঙ্গে সঙ্গে ই ‘কলিংবেল’ও যা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। হুজুরকে রিমান্ডে আনা হবে।’
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানা পুলিশের ওসি রাশেদুজ্জামান জানান, দুটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে মাদরাসার ওই অধ্যক্ষের (মুহতামিম) নামে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।