নিজস্ব প্রতিবেদক: তিল তিল করে ব্যাংকে জমানো লাখ টাকা খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গৃহবধূ রোকেয়া বেগম। টাকা ফেরত পাবেন এই আশ্বাসে তিনি থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেন। তারপরও টাকা না দেওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন। রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন সাতক্ষীরার মিলবাজার এলাকার মাছুমবিল্লাহর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। তিনি বলেন সাতক্ষীরার সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখায় তার শ্যালো মেশিন মেকানিক স্বামীর উপার্জনের দুই লাখ টাকা নিজ হিসাবে পর্যায়ক্রমে জমা করেন তিনি।
রোকেয়া বেগম বলেন গত ২৩ জুন তিনি পারিবারিক প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ৯৯ হাজার টাকা তুলতে একটি চেক জমা দেন। এ সময় তার হাতে একটি টোকেন দেন কর্মচারিরা। রোকেয়া জানান তিনি অনেক সময় টোকেনটি নিয়ে টাকার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এক পর্যায়ে টোকেনটি ক্যাশিয়ারের কাছে নিয়ে গেলে ক্যাশিয়ার মিজানুর রহমান বলেন ‘ টাকা তো আপনার ছেলে নিয়ে গেছে’। জবাবে রোকেয়া বলেন ‘ আমার ছেলে তো আসেই নি। তাছাড়া টোকেন তো আমার হাতে । তাহলে ছেলে কিভাবে টাকা নিয়ে গেল’। ক্যাশিয়ার কোনো জবাব দিলেন না। রোকেয়া বলেন আমার জমানো টাকা কেউ নিয়ে গেছে এ কথা ভাবতেই আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাই। তিনি বলেন চেকে সই আমার। টোকেনও আমার কাছে । একজন পুরুষ লোক কিভাবে টাকা নিয়ে যেতে পারে। অভিযোগ করে তিনি বলেন ব্যাংকের ক্যাশিয়ার মিজানুর রহমান ও মধ্য কাটিয়ার ইয়াছিন ডাক্তারের ছেলে ব্যাংক কর্মচারি কামরুল ইসলাম কামুর যোগসাজসে এই টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। তিনি এর প্রতিকার দাবি করেন।
তিনি বলেন আমি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে গিয়েছি। তিনি বলেন তদন্ত করে দেখছি। এরপর তিনি কি করেছেন তা আর জানতে পারিনি। রোকেয়া বলেন আইনগত প্রতিকার পেতে তিনি সাতক্ষীরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন ২৪ জুন সন্ধ্যায় শহরের গনমুখী ক্লাবে উপস্থিত হয়ে কামরুল ইসলাম কামু সবার সামনে বলেন ‘যা হবার হয়েছে। আপনি থানা থেকে অভিযোগ তুলে নিন। আমি আগামি কালই আপনার টাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তবে কিছু টাকা কম নিতে হবে’। অনেকটা পীড়াপীড়ি করায় আমরা তার প্রস্তাবে রাজী হয়ে থানায় দেওয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন ধুরন্ধর কামরুল ইসলাম কামু পরদিন বলেন ‘আমরা কোনো টাকা দিতে পারবো না। পারলে আদায় করে নিও’।
রোকেয়া বেগম বলেন সোনালী ব্যাংকে এখনও সেই দুই অসৎ কর্মচারি বহাল তবিয়তে রয়েছে। কিভাবে তাদের চাকুরি থাকে এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন আমি নিরুপায় হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। সাতক্ষীরার ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেছি (মামলা নম্বর ১৯০/১৯(সাত)। তিনি বলেন আমার সঞ্চিত টাকা ফেরত চাই। দুই অসাধু ব্যাংক কর্মচারির শাস্তি চাই। এ বিষয়ে তিনি সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন রোকেয়ার স্বামী মো. মাছুমবিল্লাহ।