কলারোয়া

কলারোয়া-টু-সরসকাটি সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

By Daily Satkhira

March 13, 2017

কলারোয়া ডেস্ক : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জনগুরুত্বপূর্র্ণ গ্রামীণ পাকা সড়ক গুলোর মধ্যে কলারোয়া-টু-সরসকাটি এই সড়কটির বেহাল দশা চরমে উঠেছে। এই সড়কটি দেখার যেন কেউ নেই। কলারোয়া বাজার থেকে পশ্চিম দিকে বেত্রাবতী নদী পার হয়ে বামনখালী বাজার হয়ে সরসকাটি বাজার পর্যন্ত মোট ৯ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কোন সংস্কার না হওয়ায় ভেঙ্গে চুরে নষ্ট হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া এই রাস্তার পার্শ্বে দুইটি ইট ভাটা থাকায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ছে সাধারণ মানুষ। স্তপকৃত ইটভাটার মাটি রাস্তার উপর পড়ে হাটু কাদায় পরিণত হয়েছে। কার্পেটিং-এর পাকা রাস্তা হলেও পিচের নমুনা ৯কিলোমিটরের মধ্যে প্রায় ৮কিলোমিটার নেই। রাস্তাটির অধিকাংশ জায়গা বড় বড় খানা খন্দকে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দুই একটি নছিমন, ইজিবাইক ও ভ্যান উল্টে পড়ে থাকতে দেখা যায়। আর ছোট খাটো সড়ক দুর্ঘটনা যেন নিত্য নৈতিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তাই রাস্তাটি সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি ও সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। বেহাল দশা জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি এখনই সংস্কার করা না হলে বর্ষা মৌসুমে চলাচলের অনুপযোগীতো বটেই জনদুর্ভোগের আর সীমা থাকবেনা। জরুরি এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার ব্রিগ্রেডের গাড়ি যথাসময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারছেনা। এদিকে কপোতাক্ষ নদের উপর সরসকাটি ব্রিজ হওয়ায় সড়কটি যশোর জেলার কেশেবপুর উপজেলার সাথে সংযুক্ত  রয়েছে। বিধায় দুই উপজেলার প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ মানুষের কলারোয়া ও কেশবপুর যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সড়কটি। এছাড়া এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনি শত শত ট্রাক, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল সহ হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এ মনকি কলারোয়া থেকে সরসকাটি পর্যন্ত রাস্তাটির দু’পাশে দুটি কলেজসহ কয়েকটি হাইস্কুল ও প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কয়েক’শ শিক্ষকসহ হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর চলাচলে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অল্প সময়ের পথ পাড়ি দিতে দীর্ঘ সময় লাগছে। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে যান চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে। তাই সড়কটি সংস্কার করা ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষসহ বিভিন্নœ এলাকার মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। একান্ত বাধ্য হয়ে যাতায়াত করলেও তাদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। রাস্তাটি এখন যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, কলারোয়া-টু-সরসকাটি সড়কে কলারোয়া পৌর সদরের বেত্রাবতী নদী পার হয়ে কলাগাছি মোড় হয়ে জালালাবাদ মোড় পর্যন্ত, হামিদপুর মোড় এলাকা, ভাই ভাই ইট ভাটা থেকে বামনখালী বাজার হয়ে বৈদ্যপুর মোড় পর্যন্ত এবং ওফাপুর মোড় থেকে সরসকাটি বাজারের ব্রীজের মাথা পর্যন্ত সড়কে খানা-খন্দক, গর্ত, ভাঙন এত বেশী পরিমান যে, যান চলাচল তো দুরের কথা হাঁটা চলাও ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীরা জানান, এই সড়কটিতে কয়েক বছরে সংস্কারের ছোয়া লাগেনি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। ব্যস্ততম এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভীষণ কষ্টভোগ করতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা যখন কলারোয়া হাসপাতাল সহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসে তখন রাস্তার বেহাল দশার কারণে তাদের আকুতি মিনতি দেখে মনে হয় এ যেন দেখার কেউ নেই।  ফলে জরুরিভিত্তিতে যাতে রাস্তাটি সংস্কার করা হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সাতক্ষীর-১ আসনের (তালা-কলারোয়া) এমপি এ্যাড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। কলারোয়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী জানান, কলারোয়া-টু-সরসকাটি সড়কটি সড়ক বিভাগের আওতাধীন থাকায় সংস্কারের বিষয়টি এলজিইডির আওতায় আসে না। বিধায় সংস্কার করতে পারছেন না। তবে কলারোয়ার জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি যাতে জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করা হয় এমনটি আশা ভুক্তভোগী জনগনের সাথে তিনিও ব্যক্ত করেন। এলাকাবাসীর কয়েকজন আক্ষেপ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, নদীর পূর্ব পাশের ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন প্রতিনিয়ত এই রাস্তায় চলাচল করলেও তারা যেন এ দৃশ্য দেখেও দেখেন না। তারা জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য এলাকাবাসী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।