খেলা

প্রথমবার বিশ্বকাপ জিততে ইংল্যান্ডের দরকার ২৪২ রান

By Daily Satkhira

July 14, 2019

খেলার খবর: আবারও জ্বলে উঠলেন ইংলিশ বোলাররা। সেমিফাইনালের মতো ফাইনালেও তারা দুর্দান্ত। যাতে লর্ডসের শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে নিউজিল্যান্ডকে অল্পতেই আটকে রাখতে পেরেছে ইংল্যান্ড। হেনরি নিকোলসের হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে টম ল্যাথামের প্রতিরোধে নির্ধারিত ৫০ ওভারে কিউইদের স্কোর ৮ উইকেটে ২৪১ রান।

শেষ চারের লড়াইয়ে ক্রিস ওকস ছিলেন দুর্দান্ত। ফাইনালেও বল হাতে আগুন ঝরালেন তিনি। শুরুতেই ইংলিশদের সাফল্য এনে দেওয়া এই পেসার ৯ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট। তবে সবচেয়ে কার্যকরী ছিলেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। ১০ ওভারে ৪২ রান খরচায় তার শিকার কেন উইলিয়ামসন (৩০), হেনরি নিকোলস (৫৫) ও জিমি নিশাম (১৯)।

মার্টিন গাপটিলের আউটের পর নিকোলস ও উইলিয়ামসন ৭৪ রানের জুটি গড়ে চাপ কাটিয়েছিলেন। কিন্তু অধিনায়কের আউটের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে কিউইরা। গতবারের রানার্স-আপের রান তবু অতদূর গিয়েছে ল্যাথামের প্রতিরোধে। এই ব্যাটসম্যান ৫৬ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে আউট হন ওকসের বলে। এর আগে এই পেসারের শিকার হয়েই প্যাভিলিয়নে ফেরেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (১৬)। এরপর মিচেল স্যান্টনার (৫*), ম্যাট হেনরি (৪) ও ট্রেন্ট বোল্টের (১*) ব্যাটে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড।

বাজে শটে ফিরলেন নিশাম

সম্ভাবনাময় এক ইনিংসের মৃত্যু ঘটালেন জিমি নিশাম বাজে শট খেলে। লিয়াম প্লাঙ্কেটের স্লোয়ার মিড অনের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু হয়নি, ১৯ রানে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

আবারও আঘাত প্লাঙ্কেটের। কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলসের পর এবার তার শিকার নিশাম। কিউই ব্যাটসম্যান আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার আগেই ছেঁটে ফেললেন তিনি। এই পেসারের বলে বাজে শট খেলে জো রুটের হাতে সহজ ক্যাচ দেন নিশাম।

বিতর্কিত সিদ্ধান্তে টেলর আউট

ফাইনাল মঞ্চে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হলেন রস টেলর। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন এই ব্যাটসম্যান। বল তার প্যাডে আঘাত করলেও ছিল স্টাম্প থেকে অনেকটা উঁচুতে।

দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। কিন্তু মার্ক উডের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ১৫ রান করে ফিরতে হয়েছে তাকে। ফিল্ড আম্পায়ার মারাইস এরাসমাসে আউট দিলেও রিভিউ শেষ হয়ে যাওয়ায় তার সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি টেলর।

বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে, বল টেলরের প্যাডে আঘাত করলেও স্টাম্পের অনেকটা বাইরে পিচ করেছিল। তাছাড়া বল বেশ খানিকটা ওপরে থাকা স্টাম্পেও আঘাত করেনি। রিভিউ না থাকায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ ছিল না টেলরের।

ফিফটি করে বোল্ড নিকোলস

হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে ফিরে গেলেন হেনরি নিকোলস। কেন উইলিয়ামসনকে আউট করা লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন এই ওপেনার।

দারুণ শুরুতে একপ্রান্তে আগলে রেখেছিলেন নিকোলস। ‍ফাইনাল মঞ্চে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে দলকে আরও ভালো কিছু দেওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি করে বেশিদূর যেতে পারলেন না। ৫৫ রান করে ফিরে গেছেন তিনি প্যাভিলিয়নে।

উইলিয়ামসনকে ফেরানো প্লাঙ্কেটের আঘাতে আরেকটি উইকেট হারালো কিউইরা। ইংলিশ পেসারের বল নিকোলসের ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। যাতে শেষ হয় ৪ বাউন্ডারিতে সাজানো তার ৭৭ বলের ইনিংসটি।

উইলিয়ামসনের বিদায়

শুরুটা ধীরে হলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে হাত খুলছিলেন কেন উইলিয়ামসন। তাতে আরেকটি দারুণ ইনিংসের ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু ফাইনাল মঞ্চে সেটা আর হলো না। ৩০ রান ‍করে আউট হয়ে গেছেন কিউই অধিনায়ক।

গোটা বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়েছেন উইলিয়ামসন। দলের প্রয়োজনে লড়ে গেছেন তিনি। ফাইনালে তাই তার কাছে প্রত্যাশা ছিল অনেক। সেটা মেটানোর পথে চমৎকার ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীও ছিল এই ব্যাটসম্যানের। যদিও বেশিদূর যেতে পারলেন না। লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক জস বাটলারের গ্লাভসে।

ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনার সিদ্ধান্ত অবশ্য ছিল ‘নট আউট’। যদিও ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগান রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায় বল উইলিয়ামসনের ব্যাটে লেগে জমা পড়ে বাটলারের গ্লাভসে। তাতে ৫৩ বলে ২ বাউন্ডারিতে সাজানো ইনিংসটির ইতি ঘটে।

উইলিয়ামসন-নিকোলসের প্রতিরোধ

ফাইনালে ফর্মে ফেরার আশা ছিল মার্টিন গাপটিলের। শুরুটা খারাপ না হলেও আরেকবার ব্যর্থ হয়ে ফিরে তিনি চাপে ফেলে যান দলকে। সেই জায়গা থেকে কিউইদের টেনে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন উইলিয়ামসন ও আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলস। তাদের ব্যাটে ১৪তম ওভারে ৫০ ছাড়ায় নিউজিল্যান্ডের স্কোর।

শুরুতেই ফিরলেন গাপটিল

মার্টিন গাপটিল পুরো টুর্নামেন্টে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ফাইনালেও ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারলেন না। সপ্তম ওভারে ক্রিস ওকসের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন ১৯ রান করে।

রিভিউ নিয়েছিলেন অবশ্য গাপটিল। যদিও ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। এর আগে ওকসের তৃতীয় ওভারে লেগ বিফোরের সিদ্ধান্তে অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দিয়েছিলেন নিকোলসকে। যদিও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যায় কিউই এই ওপেনার।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড

ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামছে ১২তম বিশ্বকাপের। লর্ডসে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর হয়েছে টস।

লর্ডসের ফাইনাল যে জিতবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেখবে নতুন ‍চ্যাম্পিয়ন। ক্রিকেট সবশেষ নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখেছে ১৯৯৬ সালে, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেবার শিরোপা জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর ঘুরেফিরে পুরোনোরা ফিরে পেয়েছে শ্রেষ্ঠত্ব। গত দুই দশকের ৫ আসরের চারটিই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, একবার ভারত।

ফাইনালে দুই দলের একাদশে পরিবর্তন নেই। সেমিফাইনালের একাদশ নিয়েই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নেমেছে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড।

ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, এউইন মরগান (অধিনায়ক), বেন স্টোকস, জস বাটলার, ক্রিস ওকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, আদিল রশিদ, জোফরা আর্চার, মার্ক উড।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেলর, টম ল্যাথাম, জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট।