দেশের খবর: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে পাওয়া বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানকে পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে পরিবর্তন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জেনারেল জিয়া-এরশাদ ও খালেদা গং বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করার পায়তারা চালায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এসেই বাংলাদেশে হারিয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আর রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার সংগ্রামের সূচনা করেন। জনগণের রায়ে বারবার নির্বাচিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধর্মভিত্তিক বিভাজনের রাজনীতির বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার রাষ্ট্রীয় নীতি গ্রহণ করেন।
কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রায় তিন দশক কালের জিয়া-এরশাদ-খালেদার অপশাসনের অভিশাপ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা-দুর্নীতি আর জঙ্গিবাদের ধারা রাজনীতিতে এখনো সক্রিয় রয়েছে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ত মোকাবেলা করে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি গ্রহণ করেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসম্প্রদায়িক নীতি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সূচনা করেছেন সম্প্রীতির আর অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির এক অনন্য নজির।
গৃহহারা ১৩ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’। ২০১৭ সালে খ্রিস্ট ধর্মের প্রধান যাজক পোপ ফ্রান্সিস এসেছিলেন বাংলাদেশ সফরে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি বলেছেন বাংলাদেশ শুধু উন্নয়নের রোল মডেল নয়, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিরও রোল মডেল।
তারও আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করে US Ambassador-at-large for international religious freedom, David N Saperstein বলেছিলেন, Bangladesh provides expansive degree of religious freedom.
শেখ হাসিনার সরকার আজ বাংলাদেশের জীবন-জীবিকার প্রতিটি ক্ষেত্রে সংবিধানের আলোকে প্রতিটি নাগরিকের সমমর্যাদা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন। মাঝে মাঝে সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানির সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করা হয়। সরকার ও প্রশাসন বরাবরই এসকল ঘটনা প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অসাম্প্রদায়িক মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বারবার পরাজিত করেছে।
এই অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার সম্পূর্ণ অসত্য বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি একটি নিন্দনীয় অপরাধ শুধু নয়, এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেশের অভ্যন্তরে লুকায়িত মতলববাজ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি বাংলাদেশের কোন বিবেকবান, দেশপ্রেমিক হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্য প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সাথে কোনভাবেই একমত হবেন না। প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক মানুষ সব ধর্মের সাম্প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করে। বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায় ও ধর্মবিশ্বাসের মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। কারণ একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাই বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষার সর্বশেষ ঠিকানা।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক