দেশের খবর: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে অভিযোগ করা প্রিয়া সাহা নামের এক নারীর ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে। সেই প্রিয়া সাহা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ‘দলিত কণ্ঠ’ নামের একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সে ‘দলিত কণ্ঠ’ পত্রিকায় প্রিয়া সাহার পুরো নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রিয় বালা বিশ্বাস’। বয়স দেখানো হয়েছে ৫৪ বছর। পিতার নাম- মৃত নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। ঘোষণাপত্রে দেখা যায়, চলতি বছরের ১২ জুন ঢাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল পত্রিকাটি প্রকাশের ঘোষণাপত্র প্রদান করেন।
প্রিয়া বিশ্বাস ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস তাঁর পত্রিকার ঘোষণাপত্রে ‘সরকারের স্বার্থের পরিপন্থী বা কোনো আপত্তিকর বিষয়ে আমার পত্রিকায় কোনো সংবাদ প্রকাশ হবে না’ বলে অঙ্গীকার করেছেন।
সে পত্রিকাটি ঊষা আর্ট প্রেস থেকে বর্তমানে প্রকাশিত হচ্ছে। ঘোষণাপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন অ্যাডভোকেট আল আমিন রিজভী।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট আল আমিন রিজভী বলেন, প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাসের ‘দলিত কণ্ঠ’ পত্রিকায় গত ১২ জুন তিনি শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি বলেন, এ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক রঞ্জন বকসী নুপু তাঁর পরিচিত। তিনিই প্রিয়া সাহাকে তাঁর কাছে নিয়ে আসেন।
প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয় বালা বিশ্বাস বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘শারি’র নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, থাকতেন রোকেয়া হলে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ‘মহিলা ঐক্য পরিষদ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিঞ্ঝুতার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে কথা বলেন। এতে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে এক নারী ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে (বাংলাদেশে) প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ডিসঅ্যাপেয়ার (নিখোঁজ) হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনো সেখানে (বাংলাদেশে) ১৮ মিলিয়ন (এক কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের (বাংলাদেশে) থাকতে সাহায্য করুন। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’
এ সময় ট্রাম্প জানতে চান, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’ জবাবে ওই নারী বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় পলিটিক্যাল শেল্টার (রাজনৈতিক ছত্রছায়া) পায়।’
হোয়াইট হাউজের ওয়েব সাইটের বিবৃতিতে বাংলাদেশি ওই নারীকে মিসেস সাহা পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানা যায় ওই নারীর নাম প্রিয়া সাহা।