নিজস্ব প্রতিবেদক: নিজেকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে এতোদিন বেশ দাপটের সাথে সীমান্ত এলাকা চষে বেড়িয়েছেন তিনি। এই সুযোগে নিজের আত্মীয় স্বজনকেও নামিয়েছেন মাদক চোরাচালানে। অবশেষে সেই সোর্স নিজেই হাতেনাতে ধরা পড়লেন ইয়াবাসহ। বিজিবি তাকে আটক করেছে। পুলিশ বলছে তার বিরুদ্ধে এক ডর্জন মাদক মামলা রয়েছে। এর কয়েকটিতে সে ছিল পলাতক। তবে বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে.কর্ণেল গোলাম মহিউদ্দিন খোন্দকার লিয়াকতকে আটকের কথা স্বীকার করে শনিবার দুপুরে বলেন ‘সম্ভবতঃ লিয়াকতকে ফাঁসানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। একটি মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে। মোটর সাইকেলটি ইয়ারুলের। এই ইয়ারুল তাকে ফাঁসাতে চাইছে’। আটককৃত এই সোর্সের নাম লিয়াকত আলি। তার বাবার নাম মোসলেম সরদার। সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামে তার বাড়ি। শুক্রবার রাতে লিয়াকতকে ৪৯০ পিস ইয়াবাসহ তার বাড়ির পাশ থেকে গ্রেফতার করে বিজিবির তলুইগাছা ক্যাম্প সদস্যরা। এ সময় ইয়ারুল নামের আরেক মাদক কারবারীর মোটর সাইকেলে ছিলেন লিয়াকত। তবে ইয়ারুল সুযোগ বুঝে চম্পট দেয় । বিজিবির তলুইগাছা ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মাহবুব জানান লিয়াকতকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে লিয়াকত একজন ঘাঘু মাদক ব্যবসায়ী। সে নিজেকে বিজিবি সোর্স পরিচয় দিয়ে মাদক চোরাচালান করে থাকে। তার একটি বড় আকারের মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্য কেড়াগাছির চারাবাড়ি গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ও বাঁশদহার দেলোয়ার হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কয়ার বিলে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই মাদক পাচারকালে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন। তার আরেক সহযোগী তলুইগাছার হাসান সরদার মাদক মামলায় দীর্ঘদিন যাবত ভারতে পলাতক ছিল। গত ১৮ জুলাই হাসান সরদার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়া হাসানের অনুপস্থিতিতে তার ভাই মো. কামরুজ্জামান ও হাসানের জামাতার ভ্রাতা আবুল কাসেম তার সিন্ডিকেটের মাদক কারবার পরিচালনা করতো। সম্প্রতি কামরুজ্জামানের ছেলে আল মামুনকে র্যাব সদস্যরা ক্রেতা সেজে গাঁজা কেনার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে। এদিকে লিয়াকত সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য তলুইগাছা গ্রামের আনার আলি মাদক চোরাচালান করে এখন কোটিপতি হয়ে উঠেছে। লিয়াকতের স্ত্রী বাপের বাড়িতে থেকে মাদক বেচাকেনা করে। লিয়াকত সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য ইয়ারুল এখন পলাতক। বাঁশদহা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান লিয়াকত ও লাভলু ভারত থেকে মাদকদ্রব্য পাচার করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে বিজিবি অধিনায়ক বলেছেন ইয়ারুল প্রকৃতপক্ষে লিয়াকতকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে তিনি তদন্ত শুরু করেছেন। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিজিবি রাতে লিয়াকাতকে থানায় নিয়ে আসছিল। এরপর তাদের কি ভুল হয়েছে বলে আবার লিয়কাতকে ফেরত নিয়ে যায় ।