ফিচার

ফেসবুকে ‘আলবিদা’ স্ট্যাটাস দিয়ে তরুণ-তরুণীর ‘আত্মহত্যা!

By Daily Satkhira

July 26, 2019

দেশের খবর: গত ২৩ জুলাই সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে হিমেল লিখেছিলেন, ‘আলবিদা’। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া যাচ্ছিল না কোনো খোঁজ। এরই মধ্যে নিখোঁজ হন তিন্নি নামের আরো একজন। স্থানীয় একটি কলেজের ছাত্রী তিনি। পরে জানা যায়, নিখোঁজ তিন্নি ও হিমেলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর এ কারণেই দুজন একসঙ্গে পালিয়েছেন। এদিকে দুজন ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় তাঁদের পরিবার পড়েছিল বিব্রত অবস্থায়। তাই তারা চাচ্ছিলেন, কোনোভাবে যেন খোঁজ মেলে দুজনের।

কিন্তু নিখোঁজের দুদিন পর বৃহস্পতিবার সকালে জানা গেল, একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন এই তরুণ-তরুণী। সকালে রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কের বরগাং এলাকায় হ্রদের পানিতে দুটি লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশে খবর দিলে প্রথমে তিন্নি ও পরে হিমেলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত প্রান্ত দেওয়ানজি হিমেল শহরের রিজার্ভবাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী ছোটন দেওয়ানজির ছেলে (১৮)। অন্যদিকে নিহত তাহফিমা খানম তিন্নি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক এলাকার শহীদ তালুকদারের মেয়ে (১৮)।

হিমেল রাজধানীর ক্যামব্রিয়ান কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও তিন্নি রাঙামাটির লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। রাঙামাটিতে এক আত্মীয়র বাসায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন তিন্নি।

রাঙামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানিয়েছেন, এটি ঘোষণা দিয়েই আত্মহত্যার ঘটনা। প্রেমের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। দুজন দুই ধর্মের হওয়ায় প্রেমে সফলতার কোনো সম্ভাবনা নেই দেখে তাঁরা আবেগের বশে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে বলেও জানান ওসি মীর জাহেদুল হক।

এদিকে নিহত হিমেলের বাবা ছোটন দেওয়ানজী বলেছেন, ‘তাঁরা দুজন প্রেমের কারণেই আত্মহত্যা করেছে বলেই মনে হচ্ছে। আমরা আসলে কিছুই জানতাম না। ভেবেছিলাম কোনো কারণে নিখোঁজ হয়েছে। কিন্তু কেন এটা করল, বুঝতে পারছি না।’

অন্যদিকে নিহত তিন্নির স্বজন নুরুল আলম মিয়া বলেছেন, ‘আমরা আসলে কিছুই বুঝতে পারছি না। সে আমার বাসায় থেকে পড়াশোনা করত। কিন্তু কীসের মধ্যে কী হলো, কিছুই বুঝতে পারছি না।’

এদিকে সদ্য কৈশোর পেরোনো দুই তরুণ-তরুণীর মৃত্যুতে শোকাহত পুরো রাঙামাটি শহর। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।