আন্তর্জাতিক

নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের ৫ দফা

By Daily Satkhira

March 17, 2017

ডেস্ক: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মানব পাচার রোধে বাংলাদেশের ৫ সুপারিশের প্রশংসা করলেন সদস্যরা। মানব পাচারহীন বিশ্ব রচনার সংকল্পে এসব সুপারিশ একযোগে বাস্তবায়ন করতে সকল রাষ্ট্রকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সোচ্চার হবার প্রয়োজনীয়তা উপস্থাপন করা হয়। এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টনিয়ো গুটেরেজ বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভেদ থাকলেও, এই ইস্যুতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি’।

মহাসচিব বলেন, ‘পাচারকারিদের গ্রেফতার ও বিচারে সোপর্দ, শিশু. নারীসহ সকলের নিরাপত্তা এবং পাচার প্রতিরোধের ইস্যুতে আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই এবং এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করি যেখানে মানব পাচার বলতে কিছু থাকবে না’ ।

জাতিসংঘের বিদ্যমান ব্যবস্থাতেই মানব পাচারকারিদের শায়েস্তা করার সাথে সাথে পাচার রোধেও সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় বলে উল্লেখ করেন মহাসচিব।

‘Trafficking in Persons in Conflict Situation: Forced Labour, Slavery and other Similar Practices’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এই মুক্ত আলোচনায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন মানব পাচারের বৈশ্বিক অভিশাপ প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

১৫ মার্চ বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় রাষ্ট্রদূত বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির ফলেই বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ে এই বৈশ্বিক অভিশাপ প্রতিরোধে ব্যাপক আইনগত, নীতিগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পেরেছে। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়নে ২০১৫-২০১৭ মেয়াদে জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্ম পরিকল্পনার আওতায় জেলা, উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে নিয়মিতভাবে এ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ ও পারস্পরিক সমন্বয় চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সামর্থ্য আরও বৃদ্ধি করতে তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা, কার্যকর তথ্য প্রচারণা কৌশল, বিচার প্রক্রিয়া ও মানব পাচারের মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি”।

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “বাংলাদেশ জাতিসংঘ সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র-বিরোধী সনদে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র। মানব পাচারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ সকল পক্ষের সাথেও বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আঞ্চলিক পর্যায়ে সার্ক ও বিমসটেকের আওতায় মানবপাচার প্রতিরোধ সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত করতে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ বৃদ্ধির উপরও জোর দিয়েছি”।

সংঘাতময় পরিস্থিতিতে মানব পাচার প্রতিরোধে স্থায়ী প্রতিনিধি এ সভায় পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরেন। এগুলো হল: ক) মানব পাচার সংক্রান্ত বিষয় পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয়ের জন্য জাতিসংঘ একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোকাল পয়েন্ট তৈরি করা, খ) সংঘাতময় পরিস্থিতিসহ যে কোন পরিস্থিতিতে মানব পাচার এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের শিকার ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গকে জাতিসংঘ কাউন্টার ট্রাফিকিং এজেন্ডার পুরোভাগে স্থান দেওয়া, গ) অপরাধ চক্র বিরোধী জাতিসংঘ সংস্থার আওতায় জাতীয় পর্যায়ে আইনগত পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, ঘ) মানব পাচার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইনগত বিষয়াদি ও বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনী সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান এবং ঙ) মানব পাচার ও সংশ্লিষ্ট অপরাধের মূল কারণ খুঁজে বের করা।

মানব পাচার, দাসত্ব ও জোরপূর্বক শ্রমবৃত্তির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ-সমন্বিত যে কোন পদক্ষেপকে আরও শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ সকল সদস্য রাষ্ট্রের সাথে একযোগ কাজ করে যাবে মর্মে রাষ্ট্রদূত আবারও প্রতিশ্রুতি দেন।-এনআরবি নিউজ