দেশের খবর: ‘মানবাধিকার নেত্রী’ লাভলী রহমানের ফ্ল্যাটের বারান্দার বাইরে মাটি থেকে অন্তত ১০০ ফুট ওপরে গ্রিল ধরে ঝুলে আছে গৃহকর্মী খাদিজা। হাত ছুটে গেলেই নির্ঘাত মৃত্যু। নিচে জড়ো হয়ে গেছে শত শত মানুষ। সবাই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছেন মেয়েটি যেন পড়ে না যায়। ওই অবস্থায়ই মেয়েটিকে উদ্ধার না করে বকাঝকা করছেন গৃহকর্ত্রী লাভলী রহমান। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে ছুটে আসে রমনা থানার পুলিশ। ভবনের নিচে পুলিশ ও অনেক লোক জড়ো হওয়ায় বারান্দার গ্রিলের তালা খুলে মেয়েটিকে ঘরে নেন গৃহকর্ত্রী। এর আগে মেয়েটি যখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গ্রিলে ঝুলছিল তখন ওই মানবাধিকার নেত্রী নিজে ভিতর থেকে গ্রিলের দরজায় তালা মেরে দেন।
গতকাল দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর কাকরাইলের সার্কিট হাউস রোডের ‘গাউছিয়া ডাইনেস্টি’ অ্যাপার্টমেন্টে। ১৫ তলা ভবনের দশম তলায় লাভলী রহমানের ফ্ল্যাট। সেই ফ্ল্যাটেরই বারান্দার বাইরে গ্রিল ধরে ২০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে ঝুলছিল ১৪ বছরের গৃহকর্মী খাদিজা। এ সময় নিচ থেকে বার বার লাভলী রহমানকে ঘর থেকে বারান্দায় আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ওই নারীই (লাভলী রহমান) মেয়েটিকে বারান্দার বাইরে বের করে গ্রিলের দরজায় তালা মেরে ঘরের ভিতর চলে যান। কিছুক্ষণ পর এসে হাত উঁচিয়ে মেয়েটিকে কিছু একটা বলছিলেন। অনেক উঁচুতে হওয়ায় নিচ থেকে কথাগুলো শোনা যাচ্ছিল না। তবে বকাঝকা করছিলেন তা বোঝা যাচ্ছিল।
খবর পেয়ে একদল পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম। ভবনের দশম তলার (লিফটের ৯) ‘বি-১০’ নম্বর ফ্ল্যাটে গেলে লাভলী রহমান নির্বিকারভাবে দরজা খুলে দেন। তার আচরণে মনে হচ্ছিল যেন তেমন কিছুই হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনো কিছুর উত্তর দেয়নি গৃহকর্মী খাদিজা। জহিরুল ইসলাম গতকাল রাতে বলেন, দুই গৃহকর্মীর মধ্যে ঝগড়ার জেরে এমনটা ঘটেছে বলে এখন পর্যন্ত জেনেছি। তবে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।