নিজস্ব প্রতিনিধি : দেবহাটা উপজেলার দেবহাটা ৫নং সদর ইউনিয়ন পরিষদে বুধবার ছিল ভিজিএফের চাউল বিতরনের দিন। অসহায় ও দুঃস্থদের মধ্যে ভিজিএফের চাউল বিতরনে অনিয়মের কারনে চাল বিতরনের এক পর্যায়ে হট্রগোল দেখা দেয়। পরে দেবহাটা থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ও ভিজিএফের চাল নেয়া মানুষদের তথ্য মতে জানা গেছে, দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট কার্ড ৩০৪০ জন কার্ডধারী ব্যক্তিকে ১৫ কেজি হারে ভিজিএফের চাউল বিতরনের লক্ষ্যে সকালে ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী, ইউপি সদস্য/সদস্যাবৃন্দ ও ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জুয়েল হোসেনের উপস্থিতিতে উদ্বোধন করা হয়। আর এজন্য ৪৫ হাজার ৬ শত কেজি চাউল বরাদ্দ পাওয়া যায়। মোট উদ্বোধনের পরবর্তী জুয়েল হোসেন অফিসিয়াল কাজে উপজেলায় চলে আসলে ভিজিএফ কার্ডধারীদের মধ্যে ১৫ কেজির পরিবর্তে ব্যক্তি বিশেষে ১১ কেজি, ১২ কেজি করে চাউল দেয়া হয়। সেসময় কয়েকজন চাউল কম দেয়ার কারন জিজ্ঞাসা করলে সংশ্লিষ্টরা বেচে যাওয়া চাউল অন্যদেরকে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। চাউল বিতরনের শেষ পর্যায়ে বিতরন পরবর্তী প্রায় ৮৫ বস্তা চাউল উদ্বৃত্ত থাকে। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল বশার ও সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়। সদর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পরিস্থিতি অনেকটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। বিভিন্ন মানুষ চাউল বিতরনে অনিয়মের বিষয় জানান। পরে সাংবাদিকবৃন্দ ট্যাগ অফিসারকে নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে টাউনশ্রীপুর বাজারে আনারুলের দোকানে দিয়ে ৩ বস্তা চাউল পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখা যায়। সেসময় দোকানদার আনারুলকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি চাউলের মালিককে সেটা জানেননা বলে জানান। কিছু সময় পরে সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাশেম এসে জানান, চাউলগুলো ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে তিনি এনে রেখেছেন। সেসময় পরিষদে কার্ডধারী ব্যক্তির বাইরে আসা অনেককে বেচে যাওয়া চাউল বিতরন করতে দেখা যায়। এসময় দেবহাটা থানার এসআই হেকমত আলী ইউনিয়ন পরিষদে পৌছে বেচে যাওয়া চালগুলো উপস্থিত দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে বিতরন করতে বলেন। কয়েকজন ইউপি সদস্য সাংবাদিকদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, তাদের উপস্থিতির কারনেই চালগুলো বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া কয়েকজন ইউপি সদস্য ভিজিএফের কার্ড বিতরনে তাদের কোন মতামত নেয়া হয়নি বলে চেয়ারম্যানের উপর অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার জুয়েল হোসেন বলেন, তিনি চাউল বিতরন উদ্বোধন করে অফিসে গেলে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে সংবাদি দিলে তিনি পুনরায় এসেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজী চাউল বিতরনে কোন অনিয়ম করা হয়নি উল্লেখ করে বলেন, তার বিরোধী পক্ষরা দূর্নাম করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন জানিয়েছেন, অভিযোগটি তদন্ত পূর্বত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যে চাউল অসহায় ও দুঃস্থদের বিতরনের জন্য দেয়া হয়, সেই চাউল যদি কম দেয়া হয় তাহলে সাধারন মানুষ আর কার উপরে আস্থা রাখবে।