জাতীয়

ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে মফস্বলে, কমছে ঢাকায়

By Daily Satkhira

August 10, 2019

দেশের খবর: চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি আগস্টের ৯ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা জুলাই মাসের মোট সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে স্বস্তির খবর হলো- গত দু’দিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। যদিও রাজধানী ঢাকার তুলনায় বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঈদের ছুটিতে মানুষ গ্রামে গেলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুক্রবার আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৯। সাতক্ষীরাতে এখনও কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া না গেলেও আক্রান্তের সংখ্যঅ আগেই একশ ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে নতুন করে ২০০২ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানীতে ৯৪৭ জন এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৫৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগস্ট মাসের ৯ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা জুলাই মাসের তুলনায় এক হাজার ৯৫৪ জন বেড়েছে। জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন। আর আগস্ট মাসের ৯ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ২০৭ জন।

গত ৩ আগস্ট থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কিছুটা কমেছে। ৩ আগস্ট নতুন করে এক হাজার ৭০৩ জন আক্রান্ত হয়েছিল। এরপর গতকাল বুধবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এক হাজার ৮৯৬ জন, দুই হাজার ৮৫ জন, দুই হাজার ৩৪৮ জন এবং দুই হাজার ৪২৮ জন আক্রান্ত হয়েছিল। এরপর বৃহস্পতিবার কিছুটা কমে দুই হাজার ৩২৬ এবং শুক্রবার আরও কমে দুই হাজার দু’জন নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৬ হাজার ৬৬৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৭ হাজার ৮৭৬ জন বাসায় ফিরেছেন। বর্তমানে আট হাজার ৭৬৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার ৪০ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পাঁচ হাজার ৭৬ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় ৩ হাজার ৬৮৭ জন ভর্তি আছেন।

শুক্রবার সব মিলে ছয়জনের মৃত্যু হয়। ঢাকা শিশু হাসপাতালে মারা যায় দুই শিশু ফাতিমা ও জান্নাতুল। ফাতিমার বাসা রাজধানীর বংশাল এলাকায়। গত ৬ আগস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জান্নাতুলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। গত ৭ আগস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রিফাত নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতালের শিশু বিভাগে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গতকাল দুপুরে লিপি আক্তার মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মৃত্যু হয় মজিবর রহমানের। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার চরকলোনী এলাকায়। তিনি বরগুনা রাইফেলস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গতকাল ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে দিনাজপুরে আসার পথে মারা গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের কিশোরী অপি রানী রায়। এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অপি ঢাকায় কোচিং করতে এসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৯৯ জনে পৌঁছাল।

এ ছাড়া রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৭৮৪, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৩৪, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০৫, খুলনা বিভাগে ৬১৯, রাজশাহী বিভাগে ৪৫৪, রংপুর বিভাগে ২৬৯, বরিশাল বিভাগে ৫২৩, সিলেট বিভাগে ৯৯ জনসহ মোট তিন হাজার ৬৮৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন।