খেলার খবর: বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা দেশকে অনেক সাফল্যই এনে দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) মনে করছে, তার সময় শেষ। ৩৬ ছুঁই ছুঁই এই পেসারের নতুন করে আর দেয়ার কিছু নেই। বরং নতুনদের সুযোগ দেয়াই হবে ওয়ানডে অধিনায়কের বড় দায়িত্ব। তবে মাশরাফি এখনই ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চাচ্ছেন না। এ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালে বিসিবি মাশরাফিকে প্রাপ্য সম্মান দিয়ে বিদায়ী ম্যাচ আয়োজন করতে প্রস্তুত। কিন্তু অবসরের প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না মাশরাফি নিজেই। এজন্য বোর্ডের কাছে দু’মাস সময় চাইলেন ওয়ানডে অধিনায়ক। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে শনিবার বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বসেছিলেন মাশরাফি। এরপর তিনি নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দু’মাস সময় চেয়েছেন।
বিশ্বকাপের আগে থেকেই মাশরাফির অবসর নিয়ে গুঞ্জন চলছে। অবসরে যাওয়ার কথা কখনই সরাসরি বলেননি এই ডান-হাতি পেসার। কিন্তু বিসিবি তাকে বিদায় জানানোর জন্য ৬০ লাখ টাকা খরচ করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজনের চিন্তা করেছিল। সেই প্রস্তাবে না করে দিয়েছেন মাশরাফি। মিরপুরে কাল নতুন কোচের নাম ঘোষণার আগে তার সঙ্গে আলোচনা করেন বিসিবি সভাপতি। পরে নাজমুল হাসান বলেন, ‘সাকিব (আল হাসান) দুই-তিনদিন আগে আমার সঙ্গে বসেছিল। ওর সঙ্গেও আমি কোচ নিয়ে আলাপ করেছি, যেহেতু ও একজন অধিনায়ক। মাশরাফিও একজন অধিনায়ক। আজ এখানে কোচের নাম ঘোষণার আগে ওর সঙ্গেও কথা হয়েছে। মাশরাফিকেও জানানো হল। মূলত কোচ নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা ওয়ানডে আয়োজন করব কি না সেই ব্যাপারে মাশরাফিকে জিজ্ঞেস করেছি। সে মনে করে, এটা খুব দ্রুত হয়ে যায়। আগামী মে মাসের আগে আমাদের কোনো ওয়ানডে নেই। সেজন্য এক্ষুণি না হলে ওর জন্য সুবিধা হয়। ও যদি দু’মাস সময় পায় তাহলে দু’মাস পর সিদ্ধান্ত নিতে চায়।’
এদিকে বিসিবির এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অবসরের কথা উঠতেই মাশরাফি অনেকটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে। সে এখনই বিদায় নিতে চাচ্ছে না। কিন্তু তারও বুঝতে হবে সময় শেষ হয়ে গেছে।’ ২০২০ টি ২০ বিশ্বকাপ সামনে রেখে বাংলাদেশের পরিকল্পনায় আপাতত শুধুই ২০ ওভারের ম্যাচ রয়েছে। এর সঙ্গে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য অনেক টেস্ট ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ। আগামী বছর মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফরে খেলবে তিনটি ওয়ানডে, পরে ডিসেম্বরে দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলবে তিনটি ওয়ানডে।
এ বছর কোনো ওয়ানডে ম্যাচ না থাকায় ভেবেচিন্তে মাশরাফিকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বিসিবি। একই সঙ্গে ওয়ানডে অধিনায়কের ব্যাপারেও নতুন করে ভাবতে পারে বিসিবি। নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমি বলেছি, কোনো সমস্যা নেই। দু’মাস সময় নিক। সামনে যেহেতু আমাদের কোনো ওয়ানডে নেই। ওয়ানডে অধিনায়কত্ব কি হবে, সেটা যখন খেলা হবে তখনই কথা হবে।’ মাশরাফি না বললেও তার বিদায়ের জন্য বিসিবি ঘটা করে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন উদাহরণ বাংলাদেশে আগে দেখা যায়নি। মাশরাফির মতো অন্য ক্রিকেটারের বেলাতেও একই চিত্র দেখা যাবে কি? বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এটা শুধু বোর্ড ভাবলেই হবে না। খেলোয়াড়ের মাথায়ও চিন্তাটা আসতে হয়। খেলোয়াড় যদি সেভাবে চিন্তা না করে, তাহলে তো লাভ হল না। আমাদের কাজ হল জানানো যে আমরা ভালোভাবে, সুন্দরভাবে বিদায় দিতে চাই। এখন সিদ্ধান্ত তার। সে যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারে নেবে, না হলে বোর্ড বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেবে।’ বিসিবি সভাপতি এর আগেও বলেছেন জাতীয় দলে এখন থেকে নিয়মিত খেলতে হলে মাশরাফিকে ফিটনেস পরীক্ষায় নামতে হবে। পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। তা না হলে দলে জায়গা হবে না।