বিদেশের খবর: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে অবস্থানকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছেন জয়শঙ্কর। ঢাকা সফরকালে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাষ্টীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক করবেন।
ঢাকায় নেমে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সবসময়ই ভালো। এ সফরে অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে। দু’দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
জয়শঙ্কর ধানমণ্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন। জয়শঙ্কর এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও শেখ হাসিনার সফরের বিস্তারিত কর্মসূচি এই সফরে নির্ধারণ করা হতে পারে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ইতঃপূর্বে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব থাকাকালে বাংলাদেশ সফর করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির আলোকে জয়শঙ্কর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম সফর করেছেন ভুটান। সেই নীতির আলোকে এবার বাংলাদেশ সফর করছেন। মোদির ঘনিষ্ঠ ও অনুগত হিসেবে পরিচিত জয়শঙ্কর দেশটির বর্তমান সরকারের প্রভাবশালী একজন মন্ত্রী।
তার সফরকালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানির ভাগাভাগি, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের সহযোগিতা, ভারতের ঋণের বিষয়সহ সার্বিক দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আসন্ন ভারত সফরকালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ৩ ও ৪ অক্টোবর দিল্লিতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আঞ্চলিক বিষয়গুলো বিশেষ করে ভূ-রাজনীতি, বৈষম্য, পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
এতে সরকার, বেসরকারি খাত, সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটের ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও কো-চেয়ার হিসেবে অংশগ্রহণকারী উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ দেশটির নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাইয়ে চীনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বেশকিছু চুক্তি সই হয়েছে।
এবার ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে যোগদানের সুযোগে ভারতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং সেখানে নতুন কিছু চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ বরাবরই দুই বড় প্রতিবেশী ভারত ও চীনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর দৃশ্যত সেই ধারাবাহিকতার অংশ।