অপ্রতিম : মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল খালেক মণ্ডলসহ চারজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। অভিযোগটি আমলে নিতে আগামী ২০ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী। আদালতে অভিযোগ দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ-আল মালুম, প্রসিকিউটর শাহীদুর রহমান, প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা, প্রসিকিউটর জাহিদ হোসেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। এ মামলার চার আসামির মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর গ্রামের খালেক মণ্ডল ওরফে জল্লাদ খালেক (৭২) গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। পলাতক দুই আসামি হলেন একই উপজেলার দক্ষিণ পলাশপোল গ্রামের খান রোকনুজ্জামান (৬৫) ও বৈকাবি গ্রামের জহিরুল ইসলাম ওরফে টেক্কা খান (৬৬)। অন্যদিকে গত শনিবার গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে আছেন বুলারটি গ্রামের এম আবদুল্লাহ আল বাকি (১০৩)। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, আটক, শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ছয়জনকে হত্যা, দুজনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ। অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাহিনী গঠন করে এর নেতৃত্ব দেন খালেক মণ্ডল। এরপর অন্য আসামিদের নিয়ে তৎকালীন সাতক্ষীরা সদর মহকুমা এলাকায় এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে তদন্ত শুরু করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার সাক্ষীসহ মোট ৬০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। ২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর মহিলা মাদ্রাসায় নাশকতার উদ্দেশ্যে কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে গোপন বৈঠকের অভিযোগে আবদুল খালেক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বছরের ২৫ আগস্ট আবদুল খালেক মণ্ডলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় দায়ের করা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার মধ্যে শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখান ট্রাইব্যুনাল। শিমুলবাড়িয়া গ্রামের রুস্তম আলীসহ পাঁচজনকে হত্যার অভিযোগে ২০০৯ সালের ২ জুলাই খালেক মণ্ডলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা করেন শহীদ রুস্তম আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী।