ফিচার

ডিসির পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের খাস কামরা! শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

By Daily Satkhira

August 27, 2019

শিক্ষা ডেস্ক: সদ্য ওএসডি হওয়া জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীরের খাস কামরায় যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতির কক্ষে খাস কামরার সন্ধান পেয়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ওই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কামরার খাটসহ আসবাবপত্র বের করে দেয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বর্তমান সভাপতি আমিরুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বিভিন্ন সময়ে বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই কক্ষে নিয়ে যৌন নির্যাতন চালায়। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও সামাজিক সম্মান ও শিক্ষাজীবনের কথা ভেবে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করতে সাহস পাননি। সম্প্রতি ওই কক্ষে খাট পেতে খাস কামরা তৈরির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতির কক্ষে গিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে ওই গোপন খাস কামরায় সুসজ্জিত বিছানা সন্ধান মেলে। এ সময় তাদের তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কামরা থেকে খাটসহ আসবাবপত্র বের করে ফেলে। তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই বিভাগের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি নিয়মিত ও সান্ধ্য কোর্সের নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে জোরপূর্বক তাদের ওই কক্ষে ডেকে নিতেন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্যম্পাসে কানাঘুষা হলেও কোনো তোয়াক্কা না করেও তাদের অপকর্ম চালিয়ে যান তারা।

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ চৌধুরী আসিফ বলেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন ওই দুই শিক্ষকের অপকর্মের কথা। বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও আজ অফিস কক্ষে এ ধরনের সুসজ্জিত খাস কামরার কী প্রয়োজন তা আমাদের বোধগম্য নয়। নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হেনস্তার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ের অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, নৈশ ও নিয়মিত কোর্সের ক্লাশ নেওয়ার জন্যে ক্যম্পাসে শিক্ষকদের দীর্ঘসময় অবস্থান করার কারণে আগের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বিশ্রাম কক্ষ তৈরি করেন। যা শুধুমাত্র বিশ্রামের জন্যেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সাবেক সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, প্রশ্নপত্র প্রনয়ণসহ বিভিন্ন গোপন কাজের জন্যে কক্ষটি তৈরি করা হয়েছিল। কখনোই কোনো নারী শিক্ষার্থী যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেনি। অভ্যন্তরীণ শিক্ষক রাজনীতির কারণে ছাত্রদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য বিভাগে এ ধরনের খাস কামরা না থাকলেও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রয়োজনীয়তা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।