রাজনীতির খবর: জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা কে হবেন- এ নিয়ে দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বের মধ্যেই এবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে এরশাদপত্নী রওশন এরশাদের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রওশনের গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
গত ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার চেয়ারম্যান হন তার ছোটভাই জি এম কাদের। ওই সময়ই তাকে এ পদে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিবৃতি দেন রওশন এরশাদ।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যানের অবর্তমানে কো-চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ পদে যাবেন। রওশন এরশাদ হলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান। ওই হিসেবে রওশন এরশাদই দলের মূল দায়িত্বে থাকবেন। জি এম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে আমরা মানি না।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির ২৫ এমপির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোলাম কিবরিয়া টিপু, লিয়াকত হোসেন খোকা, সেলিম ওসমান, ফখরুল ইমাম ও মজিবুল হক চুন্নু।
কয়েকদিন ধরেই জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। স্পিকারকে পাল্টাপাল্টি চিঠিও দিয়েছেন রওশন এরশাদ ও জি এম কাদের।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য বিরোধীদলীয় নেতার পদে বসতে মঙ্গলবার তার ছোট ভাই জিএম কাদেরের দেওয়া চিঠির পরদিন বুধবার বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন রওশন এরশাদ।
জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করতে জাতীয় পার্টির প্যাডে পাঠানো চিঠি নিয়ে আপত্তি তুলে দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের পাঠানো চিঠিটি বিকেলে স্পিকারের কার্যালয়ে পৌঁছে দেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ মুজিবুল হক চুন্নু।
চুন্নু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওই চিঠিতে জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করতে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তা যথাযথ হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি কমিটির কোনো বৈঠক ছাড়া স্পিকারকে দেওয়া জি এম কাদেরের চিঠিটির কোনো দাম নাই। জি এম কাদের পার্লামেন্টারি কমিটির কোনো বৈঠক না করেই লুকিয়ে এই চিঠি দিয়ে থাকলে আমি ও আমরা সে বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে কোনো নোটিস বা ফোন দেওয়া হয়নি। চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে শুনছি।
এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার এমপির সংখ্যা ২৫। নিয়ামনুযায়ী, বিরোধীদলীয় নেতা হতে ১৩ জন এমপির সমর্থন প্রয়োজন জিএম কাদেরের।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অভাবনীয় ফল করে বিএনপিকে পিছনে ফেলে ২২ আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দল হয় জাপা। সংরক্ষিত মহিলা আসনের চারটি ভাগে পায় দলটি। বিএনপিবিহীন দশম সংসদেও প্রধান বিরোধীদল ছিল জাপা। সেবার মন্ত্রী পদমর্যাদার বিরোধীদলীয় নেতার পদে বসেন রওশন এরশাদ।
একাদশ নির্বাচনের পর স্ত্রীকে সরিয়ে নিজেই বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন এরশাদ। জিএম কাদেরকে উপনেতা নিয়োগ করেন। আড়াই মাসের মাথায় এ সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। গত ২২ মার্চ জি এম কাদেরকে সরিয়ে উপনেতা করেন রওশন এরশাদকে।