অপ্রতিম রহমান : দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পুরস্কার আর পদক নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্ন আছে। পুরস্কারপ্রাপ্তরা নিজেরাই ঢাকঢোল পিটিয়ে সকলকে তাদের কৃতিত্বের জানান দেন। আবার সংবাদপত্রওয়ালা বা সাংবাদিকরাও মিষ্টিমুখ করেন এসব কৃতিত্বের বর্ণনা ছাপিয়ে/প্রচার করে। অনেকে আবার বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন থেকে কেনেন বিভিন্ন পদক। যা তাদের হাতে তুলে দেন দেশের কোন খ্যাতিমান ব্যক্তি। এরপর শুরু হয় সাজানো সংবর্ধনা আর প্রশংসার বাণী! কিন্তু, বাস্তবে মানুষ এগুলো নিয়ে কি ভাবে, তা নিয়ে কারও বিশেষ মাথাব্যাথা নেই। এবার সরাসরি সরকারিভাবে খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ জনপ্রতিনিধি হওয়া কালিগঞ্জের এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুরুরতর সব অভিযোগ করেছেন তারই সহকর্মী ইউপি সদস্যবৃন্দ। বুধবার সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন করে কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ এনেছেন তার ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্য। তাদের অভিযোগÑ একই পরিবারে শিশু কার্ড, ভিজিডি কার্ড এমনকি রেশন কার্ডও দিয়েছেন তিনি। ইউনিয়নব্যাপী যে ২৫৪টি ভিজিডি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি ইউপি সদস্যদের! উল্লেখ্য, এই পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রতিধি ইতিপূর্বে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালে এক বালিকাকে বিবাহ করে জেলও খেটেছিলেন! বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরায় এক সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা আরও বলেন, ভিজিডি কার্ডের অনুকূলে যে চাল দেওয়া হয় চেয়ারম্যান তার বহন খরচ বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ টাকা করে কেটে নেন। চেয়ারম্যান তার বখাটে বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে পরিষদের সব কাজ করান। এমনকি একই ব্যক্তির নামে দুটি কার্ড দেওয়ার অভিযোগও করেন তারা। এসব নিয়ে তারা কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেও তার প্রতিকার পাননি তারা। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য মির্জা সাদেক আলি, আকবর আলি, নজরুল ইসলাম, কাজি হাফিজউদ্দিন বাবু, জিএম রবিউল আলম, ফেরদাউস মোড়ল, হামিদা সুলতানা ও রাজিয়া সুলতানা। তারা লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যানের কাছে এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এসব কারণে তারা পরিষদে যাওয়া বন্ধ করেছেন। তবে চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদি অসুস্থ অবস্থায় ঢাকায় অবস্থান করায় তার পক্ষে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতি ওয়ার্ডে মিটিং করে ভিজিডি কার্ড বিতরণ করায় জনগণ খুব খুশী। একজন একাধিক কার্ড পাওয়া অথবা চেয়ারম্যানের বাহিনী দিয়ে কাজ করানোর সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি আরো জানান, ভিজিডির চাল প্রদানকালে বহন খরচ নেওয়াসহ চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে আনা সব দুর্নীতির অভিযোগই বানোয়াট।