ডেস্ক রিপোর্ট: বাসচাপায় নিহত শিল্পী পারভেজের আহত পুত্র আলভীর শয্যাপাশে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ,সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি।
গত বৃহস্পতিবার যে পরিবহনের বাসচাপায় উত্তরায় সংগীতশিল্পী পারভেজ রব নিহত হন, সেই একই পরিবহনের বাস চাপায় শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) তার কনিষ্ঠ পুত্র আলভী গুরুতর আহত ও তার বন্ধু মেহেদী নিহত হন।
তথ্যমন্ত্রী বিনা খরচে আলভীর চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হককে অনুরোধ জানালে তিনি সে ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। পাশাপাশি তথ্যমন্ত্রী আলভীর চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন।ট্রমা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী রফিকুল আলম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বুধবার দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে ট্রমা সেন্টারে বাসচাপায় গুরুতর আহত কিশোর আলভীকে দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন,’কিছু দানবরূপী চালকদের রুখতেই হবে।’
তিনি আরো বলেন, প্রথমত শিল্পী পারভেজ রবকে যেভাবে চাপা দেওয়া হয়েছে, তার ছেলে একই কোম্পানির গাড়িতে সেভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। দুটিই দুর্ঘটনা কিনা, বিশেষ করে পরবর্তীটির তদন্তের দাবি রাখে। আমি মনে করি, অসচেতনভাবে গাড়ি চালানোর কারণে মানুষের মৃত্যুবরণ, পঙ্গুত্ববরণ -এগুলো সব দুর্ঘটনা নয়, কিছু খুনের ঘটনা। সুতরাং এগুলোর লাগাম টেনে ধরতেই হবে।
‘ভুয়া লাইসেন্স বা রোড পারমিট ছাড়া গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে দায়ি সবার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যাদের এভাবে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার কারণে প্রাণ ঝরে পড়ছে, সেই দানবদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, রুখতেই হবে। এজন্য প্রয়োজন জোরালো প্রচার ও ক্যাম্পেইন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিংহভাগ অর্থাৎ বেশিরভাগ ড্রাইভার ভালোভাবে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করে, ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটায় না। কিন্তু কিছু চালক বেপরোয়া গাড়ি চালায়, একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামে, অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দেয়। এরা দুর্বৃত্ত। অসচেতনভাবে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো এই সমস্ত চালকের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। এদের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। এদেরকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
‘সড়ক দুর্ঘটনা একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, যা রোধে জোরালো ক্যাম্পেইন প্রয়োজন’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর সব দেশেই আছে কম বেশি। সরকার ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং ১১১টি সুপারিশ সেখানে নেওয়া হয়েছে। আমি আশা করি, এই সুপারিশগুলো যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে যাবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, দেশে সড়ক বাড়ছে, গাড়ি বাড়ছে, মানুষ বাড়ছে এর সাথে সাথে সড়কের নিরাপত্তায় মালিক সমিতি, শ্রমিক ও চালক ভাইদের সমিতি, জনগণ ও প্রশাসন ঐক্যবদ্ধভাবে একটা ক্যাম্পেইন হাতে নিতে পারি। আশা করি তাহলে আমরা এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।
‘আমি মালিক, শ্রমিক ও চালক ভাইদের সমিতিসহ বিভিন্ন সমিতিগুলোকে অনুরোধ জানাবো, যাতে করে কেউ ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাতে না পারে এবং অসুস্থ গতি প্রতিযোগিতায় না নামে, এজন্য সবার সচেতনতা দরকার’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ।