সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় প্রয়াত সহযোগি মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বলায় মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

By daily satkhira

September 12, 2019

নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির কাপসন্ডা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ৪০ মামলার আসামী রমজানের বোন কর্তৃক প্রয়াত সহযোগি মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বলায় এবং চেয়ারম্যান ডালিমের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসকাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা দিনেশ চন্দ্র মন্ডল। বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এবাদুল, মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা রইচ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সাইফুল ইসলাম, খায়রুল, বিল্লাল, সুব্রত, মিলনসহ আশাশুনি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। পরে সাতীরা প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের মৃত আলহাজ্ব মোহাজার আলী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে স্বপরে একজন মানুষ। ১৯৭১ সালে খুলনার সেক্টর কমান্ডার রহমাতুল্লা দাদুর সাথে ৩ মাস থেকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে, খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের। তার পুত্র শাহনেওয়াজ ডালিম ২০১১ সালের খাজরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসাবে খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০১৬ সালে একইভাবে নির্বাচিত হন। তার বংশে ৭জন বীরমুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। রমজান আলীর নেতৃত্বে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের কাছ থেকে জোর পূর্বক চাঁদা আদায় করাসহ বহু লোকের জমি জোর পূর্বক দখল করে। এসব বিষয়ে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম প্রতিবাদ করলে বিরোধ বাধে রমজান ও তার বাহিনীর সাথে। পারশিমারী গ্রামের বাবু কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডলের এস এ মাঠ জরিপের মালিক ২১ বিঘা সম্পত্তি ২০০৯ সাল থেকে জোর পূর্বক ভোগ দখল করে। একই গ্রামের তারকের ৫০ শতক সম্পত্তি এস এ মাঠ জরিপের মালিক দখল করে। এছাড়া এস এ মাঠ জরিপের মালিক স্বপন রায় ও দেবেন গাইনের ১ একর ৫০ শতক, নির্মল বাছাড়ের ১.৫০ একর, কাপসন্ডা গ্রামের ইকবাল হোসেনের ১ একর, রহিম মাওলানার ৬৬ শতক, নান্টু, আমজাদ সরদার, নজরুল সরদার, জাফর এর ৩ একর ৫০ শতক সম্পত্তি সন্ত্রাসী রমজান তার বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে। কাপসন্ডা গ্রামের মঈনুল মেম্বরের ৩২ একর সম্পত্তি রমজান তার বাহিনী দিয়ে দখল করলে পুলিশ ও চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় দখল মুক্ত করা হয়। ২০০৬ সালে তার পারিবারিক গোলযোগের কারণে কাপসন্ডা গ্রামের জবেদকে কুপিয়ে হত্যা করে। এড. শম্ভুর ভাই চঞ্চলকে ঢাকার একটি হোটেলে রমজান তার বাহিনী দিয়ে হত্যা করে। ১৬ জুলাই ২০১৯ তারিখে হেতালখালি বিল থেকে রমজান ৪টি গরু চুরি করে। এঘটনায় একটি মামলা রয়েছে। রমজানের ছোট বৌ ময়না বিলকিসকে দিয়ে মাদক ব্যবসা করায় তার নামে আশাশুনি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুটি মামলা আছে। রমজান বাহিনীর ভাইপো সাকিল ও আছাদুল একাধিক মাদক মামলার আসামী। গত ২০ আগস্ট-২০১৯ তারিখে সাবেক মেম্বর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক কবির হোসেন মৎস্য ঘেরে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে ২ ল টাকা চাঁদা দাবী করে। এর জের ধরে গত ২২ আগস্ট সকালে কবির হোসেন ও তার ভাই মিলন মটরসাইকেল যোগে সাতীরা যাওয়ার পথে কাপসন্ডা গ্রামে পৌছালে রমজানসহ তার বাহিনী খোকা, সাকিল ও নূরুল্লাহসহ দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় গতিরোধ করে তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা, রামদাসহ ধাওয়া করে। জীবনের ভয়ে র্পাশ্ববর্তী ছাত্তার গাজীর ঘরের ভিতরে গিয়ে আশ্রয় নিলে রমজান বাহিনী দরজা ভেঙে কবির মেম্বর এবং মিলনকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। তাদেরকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে রা করার জন্য ছাত্তার ও সামাদ এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও একই কায়দায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে যায়। সামাদকে চোখ বরাবর কোপ দিলে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীরা তাদের উদ্ধার করে সাতীরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আহতদের মধ্যে সামাদ গাজী ও কবির হোসেনকে অবস্থা আশংকা জনক। এছাড়া গত ১৯ মে (পবিত্র ১৩ রমজান) রমজানসহ তার বাহিনী দ্বারা কাপসন্ডা গ্রামের রহিমকে কুপিয়ে গুরুত জখমসহ পা ভেঙে দেয়। সে এখনো ক্রেস্ট নিয়ে হটাচলা করে। এঘটনায় সন্ত্রাসী রমজান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় মামলা দায়ের করে ভূক্তভোগী পরিবার। মামলা দায়ের হওয়ায় রমজান নিজে মামলার হাত থেকে বাঁচতে উক্ত ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এর জেরে গত ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে রমজানের বোন সাজিদা খাতুন চেয়ারম্যান ও তার মরহুম পিতা জড়িয়ে মিথ্যা রাজাকারের অভিযোগ তুলে একজন সম্মানি মানুষের মানহানি করে একটি মিথ্যা কাল্পনিক সংবাদ সম্মেলন করে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা ভিত্তিহীন ও কল্পকাহিনী মাত্র। উক্ত সাজিদা খাতুনের অভিযোগের ন্যুনতম সত্যতা নেই। শুধু মাত্র চেয়ারম্যানকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এধরনের মিথ্যাচার করা হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ওই সন্ত্রাসী রজমানের প নিয়ে ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলনকারী সাজিদার শাস্তির দাবি এবং আশাশুনি উপজেলাবাসীকে রা করতে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়, আইজিপি মহোদয়, ডিআইজি মহোদয়, সাতীরা পুলিশ সুপার মহোদয় ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে আশু হস্তপে কামনা করেন।