তোষিকে কাইফু : শনিবার সকাল ১০ টায় গণহত্যা দিবসে কালিগঞ্জে ডাকবাংলা মোড়ে স্থাপিত বধ্যভূমি স্মৃতি স্তম্ভ উদ্বোধন ও শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক। সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাত্রীতে ঢাকায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিত হামলার সেই বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে এবারই প্রথমবারের মত জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে।২৫ মার্চের সেই দিন শেষে নেমেছিল সন্ধ্যা। গভীর হতে শুরু করেছিল রাত। তখনো কেউ জানে না- কী ভয়ঙ্কর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় রাত আসছে বাঙালির জীবনে। ব্যস্ত শহর ঢাকা প্রস্তুতি নিচ্ছে ঘুমের। ঘরে ঘরে অনেকে তখন ঘুমিয়েও পড়েছে। রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে জীপ, ট্রাক বোঝাই করে নরঘাতক কাপুরুষ পাকিস্তানের সৈন্যরা ট্যাঙ্কসহ আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে ছড়িয়ে পড়লো শহরজুড়ে। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠলো আধুনিক রাইফেল, মেশিনগান ও মর্টার। মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণের মাধ্যমে পাক জল্লাদ বাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। শুরু হলো বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের উন্মত্ত তান্ডব। হকচকিত বাঙালি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়লো মৃত্যুর কোলে। মানুষের কান্না ও আর্তচিত্কারে ভারি হয়ে ওঠে শহরের আকাশ। মধ্যরাতে ঢাকা পরিণত হলো লাশের শহরে। ঢাকা শহরের রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে তারা বাঙালি নিধন শুরু করে। ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে মাত্র এক রাতেই হানাদাররা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল অর্ধ লক্ষাধিক বাঙালিকে। আর এর মানব ইতিহাসের পাতায় রচিত হলো কালিমালিপ্ত আরেকটি অধ্যায়। নিরস্ত্র, ঘুমন্ত মানুষকে বর্বরোচিতভাবে হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হলো বিশ্ববিবেক। শুধু নিষ্ঠুর ও বীভংস হত্যাকান্ডই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে থাকা গণমাধ্যমও সেদিন রেহাই পায়নি জল্লাদ ইয়াহিয়ার পরিকল্পনা থেকে।
কালিগঞ্জ অডিটরিয়ামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসানের সভাপত্বিতে এবং সাংবদিক সুকুমার দাস বাচ্চুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওহেদুজ্জামান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুফি আলহাজ্ব শেখ আতাউর রহমান, কালিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ লস্কর জায়াদুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য ও নলতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান সেলিম, কুশলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সুমন। এসময় আরোও উপস্থিত ছিলেন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শেখ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শিমুল,আহম্মদ উল্ল্যাহ বাচ্চু, তরিকুল ইসলাম লাভলু, হাফিজুর রহমান, সাজেদুল হক সাজুসহ শিক্ষক-শিক্ষাথী ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পযায়ের নেতা-কমীবৃন্দ। এর আগে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কালিগঞ্জ বধ্যভূমিতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি,কা লিগঞ্জ উপজেলা প্রশাশন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাব,কালিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন। পরে অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি দুপুর সাড়ে ১২ টায় কালিগঞ্জের চারটি ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে এক মতবিনিময় করেন। এসময় স্কুলের শিক্ষার মান ও সার্বিক বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম।