বিদেশ ডেস্ক: সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরও সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন জানিয়েছে, নিরাপত্তা জোরদারে দেশ দুইটিতে বাড়তি সেনাসদস্য এবং সামিরক সরঞ্জাম মোতায়েন করা হবে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনায় এখনই ইরানের বিরুদ্ধে কোনও সামরিক ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন পরিস্থিতিতেই সৌদি-আমিরাতে আরও সেনা মোতায়েনের উদ্যোগ নিয়েছে পেন্টাগন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার জানিয়েছেন, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুরোধের প্রেক্ষিতেই দেশ দুইটিকে সহায়তার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুইটি পক্ষ থেকে তাদের আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাড়তি সেনাসদস্য এবং সামিরক সরঞ্জাম মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের দখল নেওয়া হবে তার দেশের জন্য খুবই সহজ সিদ্ধান্ত। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের রয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আমি আগেও বলেছি, ইরানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা হবে খুবই সহজ একটি সিদ্ধান্ত। এটা হবে খুবই সহজ, সবচেয়ে সহজ বিষয়।’
২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করা হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান। এ নিয়ে তেহরানের সঙ্গে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয় ওয়াশিংটন। এর মধ্যেই ২০ সেপ্টেম্বর ইরান দখলকে খুবই সহজ সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করলেন ট্রাম্প। এদিন ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপের প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেশটির ন্যাশনাল ব্যাংকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। একইদিন সৌদি-আমিরাতে আরও সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় পেন্টাগন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন ওভাল অফিসে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি হচ্ছে ইরানের অর্থের সর্বশেষ উৎস। এটা খুব বড়। আমরা এখন ইরানের অর্থের সব উৎস বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি। কর্মকর্তারা জানিয়েছে, সৌদি-আমিরাতে বাড়তি সেনাসদস্য এবং সামিরক সরঞ্জাম মোতায়েনের বিষয়টিও কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ট্রাম্প প্রশাসন।