দেবহাটা

দেবহাটার ২১ মণ্ডপে মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আগমণের আবাহন শুরু

By Daily Satkhira

September 28, 2019

কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার বাকী আর মাত্র ৫ দিন। এগিয়ে চলেছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। তুলির শেষ আঁচড়ে দেবীর আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে। প্রতিমার মাটির কাজ শেষে এখন চলছে রং তুলির আঁচড়ের শেষ মূহুর্তের কাজ। আর মাত্র ৫ দিন পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দূর্গোৎসব। ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে মহালয়ার মধ্য দিয়ে দূর্গা দেবীর আগমনের আবাহন শুরু হয়ে গেছে। খাতায় কলমে পূজো শুরু ৩ অক্টোবর থেকে। সেদিনই পঞ্চমী। এবছর মা দুর্গা আসছেন ঘোড়ায়। আবার মায়ের গমনও এই ঘোটকে। ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমী। পঞ্জিকা মতে ঘোটকে এবার আগমন মায়ের। ঘোড়ায় আগমন হলে তার ফল কী? ঘোড়ায় আগমন হলে তার ফল কী? প্রতিবারই কোনও না কোনও বাহনে মর্ত্যে আগমন ও মর্ত্য থেকে গমন হয় মা দুর্গার। এমনই মত শাস্ত্রজ্ঞদের। আর ঐতিহ্য পরম্পরা মেনে সেই বাহনের বিচারে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয় যে মায়ের গমন ও আগমনে কী ফল উঠে আসতে চলেছে। ঘোড়ায় মায়ের আগমন মানেই ফল হলো ছত্রভঙ্গ। তাতে সমস্ত কিছু ওলট পালট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পন্ডিতদের দাবি, এই ঘোড়ায় আগমন শুভ নয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলা ও থানা প্রশাসন সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরবিচ্ছিন্ন তৎপরতার চলছে। অন্যদিকে এগিয়ে চলেছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। তুলির শেষ আঁচড়ে দেবীর আগমনী বার্তা জানান দিচ্ছে। প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ দিকে। এর শেষে হবে রং তুলির আঁচড়ের শেষ মূহুর্তের কাজ। তাই দম ফেলার যেন সময় নেই প্রতিমা শিল্পী ও কারিগরদের। এবছর উপজেলার ২১ টি পূজা মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে বলে জানা গেছে। উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে যে ২১ টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো কুলিয়া ইউনিয়নের বহেরা দূর্গাপূজা মন্ডপ, কুলিয়া ঘোষপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পশ্চিমপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, বালিয়াডাঙ্গা দূর্গাপূজা মন্ডপ, হিজলডাঙ্গা দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পূর্বপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ ও সুবর্নাবাদ দূর্গাপূজা মন্ডপ, পারুলিয়া ইউনিয়নের সন্ন্যাসখোলা সার্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, উত্তর পারুলিয়া চারা বটতলা দূর্গাপূজা মন্ডপ, দক্ষিন পারুলিয়া জেলেপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, নোড়ারচক দূর্গাপূজা মন্ডপ, বড়শান্তা দূর্গাপূজা মন্ডপ, মাঝ পারুলিয়া দূর্গাপূজা মন্ডপ ও উত্তর কোমরপুর দূর্গাপূজা মন্ডপ, সখিপুর ইউনিয়নের পালপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, কোড়াঁ পাকড়াতলা দূর্গাপূজা মন্ডপ, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের গাজীরহাট দূর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ফুটবল মাঠ দূর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা বাজার দূর্গাপূজা মন্ডপ, টাউনশ্রীপুর দূর্গাপূজা মন্ডপ ও টাউনশ্রীপুর পালপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ। ইতিমধ্যে পূজা উদযাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বিভিন্ন আয়োজন সম্পন্ন করছে। কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীতে। কোন কোন কারিগরেরা একাধিক স্থানে প্রতিমা তৈরী করছেন। প্রতিমা শিল্পীরা জানান, সময় যেহেতু আর নেই তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবিরাম কাজ করে চলেছেন তারা। তাছাড়া নিখূঁত মূর্তি তৈরীতে করণীয় সব রকম উপকরন ব্যবহার করা হচ্ছে। দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতিমার মাটির কাজ শেষে রং তুলির আঁচরে প্রতিমাগুলো জীবন্ত করে তুলছেন তারা। এসব প্রতিমার কাজগুলো ষষ্ঠির আগে শেষ করতে হবে। দূর্গা প্রতিমা তৈরীতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয় বলে তারা জানান। দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে পূজা উদযাপনে আইনশৃ্খংলা শান্তিপূর্ন রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা জানান, এবছর দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে আইনশৃ্খংলা বাহিনী সদা তৎপর। ইতিমধ্যে উপজেলার সকল মন্ডপের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। উপজেলার ৫ টি মন্ডপে জনসমাগম বেশী হওয়ার জন্য সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে জানিয়ে ওসি বলেন, থানার অফিসারদের ইউনিয়ন সিলেক্ট করে তিনি (ওসি) সহ সকল অফিসার প্রতিদিনই মন্দিরগুলো পরিদর্শন করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজাকে শান্তিপূর্ন ও নির্বিঘেœ উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।