ক্রীড়া ডেস্ক: সাফল্য ব্যাপারটাই এমন। এটা মানুষের মনে ভালোবাসাও বাড়িয়ে দিতে পারে। কোচ তিতের এই ব্রাজিল দলটাই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। কার্লোস দুঙ্গার ব্রাজিল সুন্দর ফুটবল খেলত না এটা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি ওইভাবে খেলিয়েই সাফল্য পেলে তাঁকে হয়তো বরখাস্ত হতে হতো না। দুঙ্গা সেটাও পারেননি। ব্রাজিলিয়ানদের বিরক্তি তাই চরমে পৌঁছেছিল। ফলে যেতে হলো দুঙ্গাকে, এলেন তিতে। আর কী আশ্চর্য! তাঁর অধীনে ব্রাজিল হঠাৎ করে হয়ে গেল অপ্রতিরোধ্য এক দল। সাফল্যের সঙ্গে খেলায় ফিরল সৌন্দর্যও। ব্রাজিলিয়ানরাও যেন আবার নতুন করে প্রেমে পড়ল তাঁদের ফুটবল দলের। এতটাই যে, এখন নেইমারদের অনুশীলন দেখতেও হাজার হাজার লোক আসছেন। তা-ও আবার টাকা খরচ করে! বিশ্বাস হচ্ছে না? আগামীকাল সকালে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ব্রাজিলের। সেটি সামনে রেখে গত কয়েক দিন সাও পাওলোর মোরুম্বি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছে ব্রাজিল। গত শনিবারের অনুশীলনটা যাতে দর্শকেরা দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করেছিল ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন। সে জন্য টিকিট কাটার বদলে সব দর্শককে কোনো না কোনো খাবার নিয়ে আসতে হয়েছে। যে খাবারগুলো দান করা হয়েছে একটা দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। মোরুম্বি স্টেডিয়ামে সেদিন ভিড় জমিয়েছিলেন ১৩ হাজার দর্শক! এমনিতে অবশ্য রাশিয়ায় এক পা দিয়ে রেখেছে ব্রাজিল। বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট ৩০। ইতিহাস বলছে, লাতিন অঞ্চলে বাছাইপর্বের এই ফরম্যাটটা চালু হওয়ার পর কোনো দল ২৮ পয়েন্ট পেয়েও বিশ্বকাপ খেলতে পারেনি—এমন কখনো হয়নি। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতে গেলে ব্রাজিলের অবস্থান আরও শক্ত হবে। অঙ্কের হিসাবে অবশ্য তারপরও একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। তবে ব্রাজিল প্যারাগুয়েকে হারালে আর ওদিকে চিলি ও ইকুয়েডর হারলে এই রাউন্ডেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যাবে ব্রাজিলের। দুঙ্গার ব্রাজিলের যে অবস্থা হয়েছিল, এখন বরং আর্জেন্টিনার অনেকটা সেই অবস্থা। মেসি-ডি মারিয়া-আগুয়েরো-হিগুয়েইনদের মতো খেলোয়াড় থাকার পরও খেলায় মন ভরানোর উপকরণ থাকছে খুব কমই। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। ১৩ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে থাকলেও চার-পাঁচ-ছয়ে কলম্বিয়া-ইকুয়েডর-চিলি একেবারে আর্জেন্টিনার গায়ে গা লাগানো। চিলির বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে মেসির গোলে এদগার্দো বাউজার দল কোনোরকমে পার পেয়ে গেলেও প্রশ্ন থাকছে—এভাবে খেলে আসলে কত দূর যাওয়া যাবে? লাপাজে বলিভিয়ার বিপক্ষে আজকের ম্যাচটা তাই আর্জেন্টিনার বড় পরীক্ষা। লাপাজ স্টেডিয়ামের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মিটার ওপরে। ওখানে খেলা যেকোনো অতিথি দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ। ২০১০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে এ মাঠেই বলিভিয়ার কাছে ৬-১ গোলে হেরেছিল আর্জেন্টিনা।তবে বাউজার জন্য আশার কথা হচ্ছে, এবার বাছাইপর্বে ঠিক ছন্দে নেই বলিভিয়া। ১৩ ম্যাচে এখন পর্যন্ত পয়েন্ট মাত্র ৭, পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান নয়ে। বিশ্বকাপে খেলার আশা বলিভিয়ার প্রায় শেষ বললেই চলে। এএফপি, মার্কা।