দেশের খবর: সদ্য বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও সহ সভাপতি এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লা সীমান্তের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসছে অপরাধজগতের নানা তথ্য। ক্যাসিনো কাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী।
সম্রাটকে গ্রেফতার করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভিযান আরও আগে করলে ভালো হতো।
শারমিন বলেন, ক্যাসিনো চালিয়ে সম্রাট যে অর্থ পেত তা দলের পেছনেই খরচ করতো। মহাখালীর এই বাসায় গত দুই বছরের মধ্যে সে আসেনি। এছাড়া ক্যাসিনোর অর্থ পরিবারকেও দিত না সম্রাট। রোববার (৬ অক্টোবর) মহাখালীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
শারমিন বলেন, সম্রাট মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় যেতেন না। তিনি কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে নিজ কার্যালয়ে থাকতেন। তবে গাড়ির চালকের খরচসহ পরিবারের সব খরচ দিতেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ১৯ বছরের সংসার। আমার স্বামী কখনও চাননি- অবৈধ টাকা দিয়ে সংসার চলুক। কখনও অবৈধ টাকা তিনি সংসারে দেননি। দুই বছর ধরে আমরা আলাদা থাকছি। তবে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। এই বাসাতে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে থাকতাম।’
তিনি আরও বলেন, ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর আমি এগুলো শুনেছি। এর আগে কিছুই জানতাম না। পত্র-পত্রিকা এবং টেলিভিশন দেখে আমি জানতে পেরেছি।
‘এরপর থেকে আমিও নজরদারিতে ছিলাম। সে ক্যাসিনো কিংবা অন্য কিছুতে জড়িত ছিলেন কিনা তাও আমরা জানতাম না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সম্রাটের স্ত্রী বলেন, দলে তার বড় ভাই আছে। তবে সেটা কারা এটা জানি না। কিন্তু সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে। সবার সাথে ওর একটা ভালো বন্ডেজ আছে। সম্রাট অনেক জনপ্রিয় নেতা।
‘জি কে শামীমকে আমি চিনি না, খালেদকে চিনি। আমি মাঝে মাঝে অফিসে (কাকরাইলে) যেতাম। আমি দেখতাম, অতটুকুই।’
প্রথম স্ত্রীর ডিভোর্সের বিষয়ে শারমিন বলেন, ওই আপুটা এ্যাডভোকেট ছিল। সম্রাট যখন অফিস থেকে রাতে বাসায় আসতেন তখন তিনি ঘুম থেকে (আগে ঘুমিয়ে পড়তেন) উঠতেন। এজন্য তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতো একটি বড় ইউনিটের সভাপতি হওয়ার সুবাধে তার ছিল বিশাল বাহিনী। তিনি কাকরাইলের অফিসে অবস্থান করলেও কয়েকশ’ নেতাকর্মী সবসময় তাকে ঘিরে রাখত। অফিস থেকে বের হয়ে কোথাও গেলে তাকে প্রটোকল দিতেন শতাধিক নেতাকর্মী। অবৈধ উপার্জনের টাকা দিয়েই এ বাহিনী পালতেন সম্রাট।
এদিকে সম্রাট ক্যাসিনো ব্যবসায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে এক আত্নীয়ের বাসা থেকে রোববার ভোর ৫ টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে (র্যাব)। গ্রেফতারের পর তাকে ঢাকায় আনা হয়। পরে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে তার কাকরাইল কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব।
ক্যাসিনো কাণ্ডে বেশ কয়েকজন দাগী অপরাধী ধরা পড়লেও ক্যাসিনো সম্রাটের অন্যতম সহযোগী মমিনুল হক সাঈদ এখনও অধরা।