নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অন্তঃস্বত্তা এক গৃহবধুকে স্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত গৃহবধুর নাম পিয়া খাতুন (১৮)। সে উপজেলার ধানদিয়া গ্রামের রাজু হোসেনের (২১) স্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ পিয়ার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় স্বামী রাজু হোসেনকে। পিয়া খাতুনের বাবা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের আকতারুল ইসলাম জানান, মেয়ে ছোট থাকতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পিয়ার মা মারা যায়। পরে সে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে মেয়ের বনি বনা না হওয়ায় গত দুই বছর আগে অপ্রাপ্ত বয়সে পিয়াকে ধানদিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে রাজু হোসেনের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় গরু ছাগল বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেয়া হয়। এরই মধ্যে মেয়ে পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। তিন মাস আগে থেকে রাজু হোসেন যৌতুক হিসাবে আরও কিছু টাকার জন্য মেয়েকে চাপসৃষ্টি করে আসছিলো। বিষয়টি নিয়ে পিয়ার মামা আরিজুল ইসলাম জামাই রাজু হোসেন ও পিয়াকে নিমন্ত্রন করে বাড়িতে নিয়ে দুই জনের সাথে কথা বলে মিমাংসা করে দেয়। এ নিয়ে গত দুই মাস ধরে দুজনের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করে আসাছিলো। নিহত পিয়ার মামা আরিজুল ইসলাম জানায়, গত বুধবার দিবাগত রাতের খাবার শেষে রাজু হোসেন পিয়াকে ফের যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার কথা জানালে দু’জনের মধ্যে কথাকাটা কাটি হয়। এক পর্যায়ে সে অন্যাত্র বিয়ে করবে বলেও হুমকি দেয়। এ নিয়ে ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজু হোসেন পিয়ার গলা টিপে ধরলে পিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পরে তার গলায় দড়ি বেঁধে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে পিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাচার করে। থানা হাজতে আটক নিহত পিয়ার স্বামী রাজু হোসেন জানায়, সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রী পিয়ার সাথে মাঝে মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় ঠিকই। তবে যৌতুকের দাবি সঠিক নয়। সে আরো জানায়, রাতের খাবর খেয়ে দু’জনে একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে ঘরের আড়ার সাথে পিয়াকে ঝুলতে দেখে প্রতিবেশীদের খবর দিই। কি কারণে বা কার উপর অভিমান করে পিয়া আত্মহত্যা করেছে তা সে জানে না। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মনির-উল-গীয়াস জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তিনি মনে করেন। এ ঘটনায় থানায় নিহতের বাবা আক্তারুল ইসলাম বাদি হয়ে বৃহষ্পতিবার জামাতা রাজু ে হাসেনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের স্বামী রাজু হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে বৃহষ্পতিবার বিকেলে পিয়ার লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।