নিজস্ব প্রতিনিধি : কৃষ্ণনগরের মাহমুদ বাহিনীর হাত থেকে পৈত্রিক সম্পত্তির রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক অসহায় বৃদ্ধা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের মোঃ বেলায়েত আলী তরফদারের ষাটোর্দ্ধ স্ত্রী হাফিজা খাতুন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় পড়ে আছে, ছেলেরা জীবিকার তাগিদে ঢাকা ও খুলনায় থাকে এবং ছোটপুত্র রাজমিস্ত্রি জোগাড়ে কাজ করে। আমার শ্বশুরের মৃত্যুর পর ওয়ারেশ হিসেবে আমার একমাত্র স্বামী জীবিত আছেন। আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগে আমার স্বামীর সম্পত্তির উপর কুনজর পড়ে একই এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু মুনছুর তরফদারের পুত্র মাহমুদ তরফদার, মৃত সাত্তার তরফদারের পুত্র মনিরুল গং এর। মাহমুদ গং গায়ের জোরে আমার স্বামীর সম্পত্তি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে। গত ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে ওই ভুমিদস্যু মাহমুদ তরফদারের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য মৃত. আঃ সাত্তার তরফদারের পুত্র মনিরুল তরফদার, আল আমিন, সহিদ তরফদারের পুত্র শফিকুল ইসলাম, মহিদ তরফদারের পুত্র শামীম হোসেন, মুনসুর তরফদারের পুত্র মহিদ তরফদার, শহিদ তরফদার, মাহমুদ তরফদারের পুত্র মোস্তাহিদসহ ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী বাহিনীর ধারালো অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে আমার অসুস্থ্য স্বামীকে টেনে হিছড়ে ঘরে থেকে বের করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এছাড়া আমাকে লোহার রড, লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করতে গেলে আমার নাতী রবিউল ইসলামকেও বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। উক্ত মামলায় উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে দুইজন জেল হাজত খাটে এবং বাকীরা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েই আমাদের উপর হামলা করে আবারো মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এঘটনায় আমি আদালতে ৭ ধারায় একটি মামলা দায়ের করলে তারা আদালতে হাজির হয়ে আর কোন ধরনের মারপিট করবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ফিরে আবারো মারপিট শুরু করে। কৃষ্ণনগর মৌজায় আমার স্বামীর নামে একাধিক স্থানে খন্ড খন্ড সম্পত্তি রয়েছে। উল্লেখিত ভুমিদস্যু মাহমুদ এতটাই কৌশলী যে একস্থানে জমি দখলের চেষ্টা করলে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে অন্য স্থানের জমির ঘেড়া, বেড়া, গাছপালা কাটা দখলের চেষ্টা চালায়। উল্লেখিত মাহমুদ বাহিনী শুধু আমাদের না এলাকার একাধিক অসহায় মানুষের সম্পত্তি দখল, অন্যায়ভাবে মারপিট, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তার বাহিনীর এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছে। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতীষ্ট হলেও তার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। মাহমুদ বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষন,নাশকতা, মারপিট, ঘরবাড়ি পোড়ানোসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুনরায় আবারো এধরনের কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি মাহমুদ বাহিনী প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করে বলছে,‘তোদের এখানে বসবাস করতে দেবে না, খুন জখম করবো, মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে ভিটে ঘুঘু চরিয়ে ছাড়বো’। আমরা বর্তমানের ওই মাহমুদ বাহিনীর কারণে বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। ওই মাহমুদ বাহিনীর হাত থেকে আমার স্বামীর সম্পত্তি রক্ষা এবং নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।