জাতীয়

শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় বাবা, চাচা-চাচিসহ ৬ জন আটক

By Daily Satkhira

October 15, 2019

দেশের খবর: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাতের আধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে তুহিন নামে ৫ বছরের শিশুকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকরা তার লাশটি রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে লিঙ্গ কেটে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, দুটি কান কেটে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়।

রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কাজাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনা জানাজানি হলে নিহতের বাড়িতে এলাকার হাজার হাজার লোকজন ভির জমায়। এমন ঘটনায় হতবাক সাধারণ মানুষ।

খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সিআইডি ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের পিতা আব্দুল বাছির, ও তার তিন চাচা মাওলানা আব্দুল মোছাব্বির, জমসেদ মিয়া, নাছির, জাকিরুল, চাচী খয়রুন বেগম এবং চাচাতো বোন তানিয়াকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

নিহত তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির জানান, ১৫ দিন আগে তার এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। রবিবার রাতে খাবার খেয়ে নিহত তুহিন ও তার ছোট ভাইকে নিয়ে ঘরের সামনের রুমে ও নবজাতককে নিয়ে মা পেছনের রুমে ঘুমিয়ে পরেন। রাত দেড়টার দিকে ঘুম ভাঙলে ঘরের বাইরে গিয়ে বাথরুম করে এসে তুহিনের উপর কাঁথা দিয়ে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পরেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে তার ভাতিজির ঘুম ভাঙলে দেখতে পান সামনের দরজা খোলা। দরজা খোলা কেন জানতে চেয়ে পাশের রুমে চাচাকে (নিহত তুহিনের বাবা) ডাকেন।

এসময় পরিবারের লোকজন উঠে দেখতে পান তুহিন ঘরে নেই। খোঁজাখুঁজি করে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে নতুন মসজিদের পাশে ঝোপের মধ্যে গাছের সঙ্গে তুহিনের লাশ ঝুলতে দেখেন।

নিহত তুহিনের বাবা বলেন, গ্রামে একসময় দ্বন্দ্ব ছিলো, এখন কারো সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। কাউকে সন্দেহ করেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি যা দেখিনি তা কিভাবে বলবো বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।

এলাকাবাসী জানান, গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে নিহত তুহিনের পরিবারের বিরোধ চলে আসছে। এর আগে মধুপুর গ্রামের মজিব ও কাজাউড়া গ্রামের নিলুফার হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শণকালে উপস্থিত গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার অনেক ক্লু পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুহিনের বাবা, ৪ চাচা, এক চাচি ও এক চাচাতো বোনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।