নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা মানববন্ধন করার প্রতিবাদে ও পুলিশের তদন্তকে মিথ্যা বলে প্রচার দেয়া শিবির নেতা শাওনকে গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, কলারোয়া উপজেলার বাকসা তাঁতিপাড়া গ্রামের মৃত দরুদ আলী মোড়লের ছেলে আবুহার মোড়ল। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আমার কন্যা লিপি খাতুন কলেজে যাওয়া আসার পথে পাঁচপোতা গ্রামের আলতাফ ও আসিফ প্রায়ই তাকে উক্ত্যক্ত করাসহ কু প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এছাড়া কলেজের অফিস সহকারী শফিকুলের সহযোগিতায় কলেজের সীমানার মধ্যেও তারা তাকে বিরক্ত করতো। আমার কন্যা বিষয়টি আমাকে জানালে আমি কলেজ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। এছাড়া আমার স্ত্রী তাদেরকে এধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাতে গেলে তারা তাকে তাড়িয়ে দেই এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে গত ২ অক্টোবর সকালে আমার কন্যা কলেজে যাওয়ার পথে বোয়ালিয়া ঋষিপাড়া নামকস্থানে পৌছালে পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা লম্পট আসিফ ও আলতাফ আমার কন্যাকে ঘিরে ধরে শরীরের কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আমার কন্যার ডাক চিৎকারে দুইপথচারী এগিয়ে আসলে তারা আমার কন্যাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় ধর্ষনসহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি প্রদর্শন করে। এঘটনায় আমার কন্যা বাড়ি ফিরে লজ্জায় অপমানে বাড়ির সকলের অগোচরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে দ্রুত তাকে কলারোয়া স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এরপর এ ঘটনায় আমি কলারোয়া থানায় উক্ত ৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করি। কলারোয়া থানা পুলিশ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক মামলাটি রেকর্ড করে আদালতে প্রেরণ করেন। এছাড়া আমার কন্যা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও প্রদান করেছে। উক্ত মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। অথচ মামলা রেকর্ড হওয়ার পরও কলেজ অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার কন্যাকে কোন খোঁজ খবর না নিয়ে উপরোন্ত তারা মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় উল্লিখিত ব্যক্তিরা মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে শিবির ক্যাডার শাওনকে দিয়ে গত ১৪ অক্টোবর একটি মিথ্যা মানববন্ধন করান। সেখানে শাওন আমার দায়ের করা মামলাটি মিথ্যা ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে। অথচ পুলিশ তদন্ত করেই মামলাটি রেকর্ড করেছেন। তিনি আরো বলেন, শাওনের মতো কুচক্রী সন্ত্রাসীদের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার কন্যার মত শত শত কন্যা যৌন হয়রানি ও এডিস নিক্ষেপের শিকার হচ্ছে। অনেকে মারাও যাচ্ছে। তাই আমি চাই লম্পট আসিফ, আলতাফ ও শাওনের কারণে আমার কন্যার মত পরিণতি যেন আর কারো না হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় উক্ত লম্পটদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।