দেশের খবর: শিশু নির্যাতন ও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেকটা শিশু যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে আর প্রতিটি শিশুর জীবন যেন অর্থবহ হয় সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। তাদের প্রতি অন্যায়-অবিচার কখনোই বরদাস্ত করা হবে না। আজকে যারা শিশু নির্যাতন বা শিশু হত্যা করছে তাদের কঠোর থেকে কঠোরতর সাজা পেতে হবে। অবশ্যই পেতে হবে।
শুক্রবার (১৮অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে মিয়া হত্যাকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের ওপর অত্যাচার বেড়েছে। বাবা হয়ে সন্তানকে হত্যা করছে অন্যকে ফাঁসানোর জন্য। কী এক মানসিকতা! এই ধরনের হীন মানসিকতা সমাজে বেড়ে চলেছে। এই মানসিকতা থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় শিশুদের কল্যাণে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
এসময় সবাইকে শিশুদের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুরা যেন ঝুঁকিমুক্ত থাকে সে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি আমরা। ঝরে পড়া শিশুদেরও শিক্ষা ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। এতিমদের জন্যও কর্মসূচি নিয়েছি। প্রতিবন্ধী যারা তাদেরও তো কোনো দোষ নেই। তাদের জন্যও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এই মুহূর্তওে যে শিশুটা জন্ম নেবে তার জীবনও যেন সুন্দর হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ইতিমধ্যে অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
সব মানুষই উন্নত, সুন্দর ও নিরাপদ জীবন পাবে। আমরা মাতৃমৃত্যুর হার, শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছি। শিশুদের জন্য অধিকতর নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।
পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খেলাধুলা ও সংস্কুতি চর্চায় শিশুদের অংশ নিতে হবে। আর সমাজের খারাপ দিকগুলো, যেমন মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস– এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। সততার সঙ্গে জীবনযাপন করতে হবে। শুধু নিজে খাব, নিজে করবো তা নিয়ে ভাবলে হবে না। তোমাদের পাশে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী শিশু দেখলে তাদের অবহেলা করো না। কারণ তারাও তোমাদের মতোই মানুষ। এতে তাদের তো কোনো দোষ নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শেখ রাসেল নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন। একটা ছোট অবুঝ শিশু, তার কি দোষ ছিল, সে তো রাজনীতি বুঝতো না, তাকে কেন হত্যা করা হয়েছিল? আর তাকে হত্যার পর ন্যায়বিচার তো দূরের কথা, বিচার রুদ্ধ করা হয়েছিল। রাসেল হত্যার পর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে শিশু হত্যার মতো ব্যাধি সমাজে ছড়িয়ে পড়তো না।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ সংগঠনটি গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘১৯৮৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি আমরা গড়ে তুলেছিলাম। শিশুদের নিয়ে শিশু সংগঠন হিসেবে তাদের পাশে থাকার জন্য।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শিশু-কিশোরদের হাতে প্রাপ্ত পুরস্কার তুলে দেন। এরপর দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন তিনি।